জুলাই ২৭, ২০২৪

আমাদের সম্পর্কে আরো জানুনঃ

আণবিক সৌর তাপীয় পদ্ধতিতে বিশেষায়িত তরল আবিষ্কার

সুইডেনের একদল গবেষক সম্প্রতি এমন এক উপায় আবিষ্কার করেছেন যাতে সৌরশক্তি ধরতে কোনো সোলার প্যানেল বা সংরক্ষণে কোনো ব্যাটারির দরকার হবে না। তারা এমন এক ধরনের বিশেষায়িত তরল আবিষ্কার করেছেন যা সূর্যের তাপকে দীর্ঘ ১৮ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারে। রোদ শোষণের পর সেই তরল হয়ে ওঠে তাপীয় জ্বালানি। পরে প্রয়োজনমতো সেই তরল থেকে ওই তাপ ব্যবহার করা যাবে জ্বালানি হিসেবে। মিলবে আলোও।
সুইডেনের গোথেনবার্গ শহরের চালমার্স প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সূর্যের থেকে শক্তি সংগ্রহের নানা উপায় নিয়ে নানা সময়ই গবেষণা হয়েছে। তবে সব গবেষণায়ই চ্যালেঞ্জ ছিল দীর্ঘ সময় ধরে তা সংরক্ষণ করা ও প্রয়োজনমতো তার ব্যবহার করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সেই কাজটিই করতে পেরেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরলে রোদের এ সংরক্ষণ পদ্ধতি সৌরশক্তি ব্যবহারের আগের যেকোনো উপায়ের চাইতে অনেক বেশি কার্যকর। বোতলে করেও এ সৌরশক্তি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা বহন করা যায়। অসাধারণ এ আবিষ্কারের গবেষণা নিবন্ধটি বিজ্ঞান সাময়িকী এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্সে প্রকাশ করার জন্য জমা দেওয়া হয়েছে।
ওই গবেষক দলের প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়টির অধ্যাপক কাসপার মথ-পলসেন জানান, তাদের এ পদ্ধতির নাম ‘আণবিক সৌর তাপীয় পদ্ধতি’। এ পদ্ধতিতে রোদকে সরাসরি তরলে সংরক্ষণের উপায় পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনমতো সেই রোদ যখন-তখন ব্যবহারও করা যাবে।
তিনি জানান, নরবর্নাডিনি নামে বাইসাইক্লিক জৈব যৌগের চরিত্রের ওপর ভিত্তি করেই তারা এ মহাগুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারটি করতে পেরেছেন। এতে সূর্যের আলো বা রোদ কোয়াড্রিসাইক্লিনে রূপান্তরিত হয়। এ উদ্যোগ প্রাথমিকভাবে শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে। সে বছরই তারা প্রথমবারের মতো বিষয়টি নিয়ে ধারণা দিতে একটি প্রদর্শনীও করেন। পাঁচ বছর পর কাজটি এবার সত্যিকারের সফল হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে অযাচিত হারে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হুমকির মুখে ফেলছে পৃথিবীর প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশকে। তেল, কয়লা বা গ্যাসের মতো খনিজ জ্বালানি ব্যবহারের কারণে কার্বন নির্গমনের হার ভয়াবহ রকমের বাড়ছে। এগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে করছে আরও ভয়াবহ। এ অবস্থায় বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করছে পরিবেশবাদী সংগঠন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সরকারও। বিকল্প শক্তি হিসেবে সৌরশক্তির ব্যবহার নিশ্চিতে অনেক রাষ্ট্র ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করে ফেলেছে। এ অবস্থায় সুইডিশ বিজ্ঞানীদের রোদকে বোতলবন্দি করার ধারণা আশার নতুন আলো জ্বালল পৃথিবীর জন্য।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Pinterest
Reddit