উন্নয়ন বার্তা প্রতিবেদন:
বিতরণ কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ানোর প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে গণশুনানি শেষ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। বিইআরসির কারিগরি কমিটি প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ১ টাকা ১০ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশও করে। সেই হিসাবে খুচরা বিদ্যুতের মূল্য গড়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ২৩ পয়সা বাড়ানোর কথা বলে বিইআরসি। এতে গড়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ ভাগ বাড়ার শংকা তৈরি হলেও এই মুহুর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যুক্তিযুক্ত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়লেও এই মুহুর্তে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোই উচিত বলে আমি মনে করি। এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়াই উচিত হবে যাতে করে গ্রাহক ভোগান্তি বাড়ে। তবে সিদ্ধান্ত যাই নেয়ার তা বিইআরসিই নেবে।
৯ জানুয়ারি সোমবার বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রতিমন্ত্রী জ্বালানি তেলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করা হবে জানিয়ে বলেন, এর জন্য নীতিমালা করছে সরকার। সেটির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সংশোধিত বিইআরসি আইন সরকার বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে ব্যবহার করবে। এর ফলে প্রয়োজনে সরকার বিদ্যুতের দাম কমাতে বা বাড়াতে পারবে। তবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বিইআরসি’র উপর নির্ভর করছে। তারা অযাচিত কিছু করবে না বলেই আমি আশা করি।
এসময় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নতুন বছরে বিদ্যুতে অনেক ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছি আমরা। আদানি, রামপাল, পায়রার বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে ক্রমান্বয়ে। এর ফলে আসন্ন গ্রিষ্মে লোডশেডিং হবে না বলে আমরা আশা করছি।
এর আগে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি (প্রাঃ) লিমিটেড (বিসিআরইসিএল)-এর মধ্যে বাস্তবায়নাধীন সিরাজগঞ্জ ৬৮ মেগাওয়াট সোলার পার্ক প্রকল্পের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষরিত হয়। এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিআরইসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ. এম. খোরশেদুল আলম। একই সময় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্টও (আইএ) স্বাক্ষরিত হয়।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিইউবো) সঙ্গে ৬৮ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সিরাজগঞ্জ সোলার পার্ক প্রকল্পের পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ) এবং ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট (আইএ) সই করা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে যুগ্ম সচিব নিরোদ চন্দ্র মন্ডল, বিইউবোর পক্ষে বোর্ড সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা এবং বাংলাদেশ-চায়না রিনিউএবল এনার্জি কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে কোম্পানির সচিব বিমল চন্দ্র রায় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেসব জমি চাষাবাদের অনুপযুক্ত সেসব জমি পুর্ণাঙ্গ ব্যবহার করতে। টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রসার দ্রুত করা আবশ্যক। ‘পাওয়ার সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান’ অনুযায়ী নবায়নযোগ জ্বালানি থেকে বর্তশানে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ক্লিন এনার্জি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পূর্ণ হবে বলে আশা করছি। প্রতিমন্ত্রী বরেন, বাংলাদেশে সোলার প্রজেক্ট করার মতো অকৃষি জমি পাওয়া দুষ্কর। যতটা অকৃষি জমি পাওয়া যায় তাতেই সোলার বা নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সৌর ও বায়ু থেকে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলমান রয়েছে।