সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলার আরও দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তারা হলেন-মামলার এজাহারনামীয় আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক ও মাহফুজুর রহমান।
দুই আসামিকে পৃথক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করানোর জন্য হাজির করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি-প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী।
এর আগে শনিবার (৩ অক্টোবর) অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে রাজনের, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২য় আদালতে আইনুলকে হাজির করা হলে বিচারক সাইফুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৩য় আদালতে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনিকে হাজির করা হলে বিচারক শারমিন খানম নীলা তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে রোববার দুই আসামিকে আদালতে জবানবন্দি নেওয়ার জন্য হাজির করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় দুই নম্বর আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮) ও ছয় নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাছুমের (২৫) ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়।
এর আগে শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটক রেখে গৃহবধূকে ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পতিকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের শিকার নারীকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ সুরমার নবদম্পতি শুক্রবার বিকেলে প্রাইভেটকারযোগে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। বিকেলে এমসি কলেজ ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী স্বামী-স্ত্রীকে ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে প্রথমে মারধর করেন। পরে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেন। ছাত্রলীগ নেতাদের প্রত্যেকেই ছাত্রাবাসে থাকেন। তারা টিলাগড়কেন্দ্রিক আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার গ্রুপের অনুসারী।
এ ঘটনায় শনিবার ভোরে ছয়জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করে নগরের শাহপরাণ থানায় এ মামলা (২১(৯)২০২০) দায়ের করেন ধর্ষিতার স্বামী। মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)।
এছাড়া ঘটনার পর অভিযানে নেমে সাইফুরের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আলাদা আরেকটি মামলা দায়ের করেন শাহপরাণ (র.) থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার। ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমানকে আসামি করে মামলা (নম্বর-২২(৯)২০২০) দায়ের করেন তিনি।