কোভিড সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান বেড়েছে

উন্নয়ন ডেস্ক –

ইমতিয়াজ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক। এই সেন্টারের একটি প্রকল্প বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি বাংলাদেশে চলমান কোভিড-১৯ মহামারির নানা দিক পর্যবেক্ষণ করছে এবং গবেষণার ভিত্তিতে নিয়মিত সমীক্ষা প্রকাশ করছে। মহামারি বিষয়ে তিনি সম্প্রতি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মশিউল আলম
মিডিয়া: বাংলাদেশে প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে দেশের একটা বড় অংশজুড়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হয়েছে; আমরা দুটো ঈদ উৎসব পার করেছি, যখন বিপুলসংখ্যক মানুষের চলাচল ও স্থানান্তর ঘটেছে। এখন, এই মুহূর্তে এ দেশে মহামারি পরিস্থিতি আপনি কেমন দেখছেন?

ইমতিয়াজ আহমেদ: কেউ কেউ প্রত্যাশা করেছিলেন, এই সময়ের মধ্যে হয়তো সংক্রমণের ধারা নিম্নমুখী হবে। কিন্তু সরকারি তথ্য-উপাত্তের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে সংক্রমণরেখা এখনো নামেনি। তবে রেখাটা যে সাংঘাতিকভাবে ঊর্ধ্বমুখে ছুটছে, সেটাও নয়। মোটামুটি একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে।

মিডিয়া: সংক্রমণরেখা নিম্নমুখী হতে আরও কত সময় লাগতে পারে?

ইমতিয়াজ আহমেদ: কোভিড-১৯ ছড়ায় সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে; তাই রোগীদের দ্রুত শনাক্ত করে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলাই সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রাথমিক উপায়। লকডাউনের পাশাপাশি প্রচুরসংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা, কোনো এলাকায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই এলাকাকে অন্যান্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে গিয়ে থাকতে পারে, এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা বা ট্রেস করা—এসব কাজ যেসব দেশ ভালোভাবে করতে পেরেছে, তারা সংক্রমণরেখা নামাতে পেরেছে। এটা যদি একটা উদাহরণ হয়, তাহলে স্পষ্টভাবেই বলা যায়, আমাদের দেশে সংক্রমণরেখা নিম্নমুখী করা খুবই কঠিন ছিল এবং এখনো কঠিনই রয়ে গেছে। কারণ, লকডাউন, পরীক্ষা, ট্রেসিং—এসব ক্ষেত্রে আমাদের বড় ঘাটতি রয়ে গেছে।

মিডিয়া: আমাদের দেশের জনঘনত্ব, অর্থনৈতিক বাস্তবতা ইত্যাদি নানা কারণে কখনোই সত্যিকার অর্থে ভালোভাবে লকডাউন কার্যকর সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণরেখা আদৌ কি নিম্নমুখী হতে পারে?

ইমতিয়াজ আহমেদ: যেসব দেশ কোভিড-১৯ মোকাবিলায় মোটামুটি সফল হয়েছে, তাদের আমরা দুটো ভাগে ভাগ করতে পারি। প্রথমত, যেসব দেশের জনসংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও কোভিড-১৯ মোকাবিলায় মোটামুটি সফল হয়েছে, যেমন চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, সেসব দেশের শাসনব্যবস্থা কর্তৃত্ববাদী ধরনের। এই ধরনের শাসনব্যবস্থার একটা সুবিধা হলো, লকডাউনের মতো নিয়ন্ত্রণ আরোপ তারা ভালোভাবেই করতে পেরেছে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ, তাদের জনঘনত্ব অনেক কম। চীন ও ভিয়েতনামের মতো দেশের তুলনায় অনেক কম। নিউজিল্যান্ডে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১৫ জন মানুষের বাস। আর অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে থাকে মাত্র ৩ দশমিক ১ জন। অন্য দিকে চীনে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ১৫৩ জন। এসব দেশের তুলনায় আমাদের দেশের জনঘনত্ব অনেক অনেক গুণ বেশি। বাংলাদেশে এখন প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ১ হাজার ২৬৫ জন। সুতরাং ওই সব দেশের সঙ্গে আমাদের তুলনা করা ঠিক হবে না।

মিডিয়া: লকডাউন কার্যকর করা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার ক্ষেত্রে আমাদের অতিরিক্ত জনঘনত্ব প্রধানতম সমস্যা…

ইমতিয়াজ আহমেদ: শুধু তা-ই নয়, আরও একটা বাস্তবতা হলো আমাদের অর্থনীতি; এ দেশের মোট শ্রমশক্তির ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ কাজ করে অনানুষ্ঠানিক খাত বা ইনফরমাল সেক্টরে। তারা কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে না যে লকডাউনে অফিস বন্ধ থাকলেও তারা মাসে মাসে বেতন পাবে এবং তাদের পরিবার চলবে। তাদের জন্য লকডাউন মানে উপার্জন হারানো। তাহলে দুটো সমস্যা যোগ করে দেখুন: একদিকে অতিরিক্ত জনঘনত্ব, অন্যদিকে শ্রমশক্তির ৯০ শতাংশের বেশি মানুষের জীবিকা। আবার এটাও মনে রাখতে হবে যে আমাদের দেশের শাসনব্যবস্থা চীনের মতো কর্তৃত্ববাদী নয়। এসব মিলিয়েই এই দেশে ওইভাবে লকডাউন করা সম্ভব নয়। ফলে সংক্রমণের হার কমাতে পারছি না; মৃত্যুর হার যদি না-ও বেড়ে থাকে, একটা জায়গায় হয়তো থেমে আছে। অর্থাৎ এটাও আমরা কমাতে পারছি না।

মিডিয়া: তাহলে সংক্রমণরেখা নিম্নমুখী করার আর কী উপায় আছে?

ইমতিয়াজ আহমেদ: কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রবণতা মূলত শহরকেন্দ্রিক। ঢাকাসহ কয়েকটি, শহুরে জনপদে সংক্রমিত হয়েছে বেশি। একেবারে গ্রামেগঞ্জে সংক্রমণ কম। এখানে ঘনবসতির একটা ব্যাপার আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। শহরগুলোতে আমরা কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে পারিনি, যেটা হয়তো কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থায় সম্ভব।

মিডিয়া: তাহলে কি যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলবে? অর্থাৎ সংক্রমণরেখা নিম্নমুখী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না?

ইমতিয়াজ আহমেদ: মানুষ তখনই শঙ্কিত-উদ্বিগ্ন হয়ে উঠবে, যখন সংক্রমিত মানুষদের মধ্যে অনেকে মারা যাবে। জটিল রোগীর সংখ্যা বাড়লে মানুষ উদ্বিগ্ন হবে। এখন জটিল রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। অনেক হাসপাতাল বলছে, তারা এপ্রিল-মে মাসের দিকে যত জটিল রোগী পেয়েছে, এখন তত পাচ্ছে না।

মিডিয়া: এখন তো মানুষ হাসপাতালে যেতেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে।

ইমতিয়াজ আহমেদ: সেটা ঠিক। কিন্তু রোগীরা হাসপাতালে যেতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে বা যেতে চাচ্ছে না, এটা একটা বিষয়, আর জটিল রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়া অন্য বিষয়। রোগীর অবস্থা জটিল হলে তো হাসপাতালে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না; সেটা অনেক কমে এসেছে। আমার কাছে কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই, কিন্তু এমন একটা ধারণা আমার হচ্ছে যে এই সময়ের মধ্যে মানুষ কোভিড-১৯ রোগটি সম্পর্কে কিছু ধারণা বা জ্ঞান লাভ করেছে। যেমন কেউ আক্রান্ত হলে কী কী ওষুধপত্র খেতে হবে, কীভাবে শুশ্রূষা করতে হবে, রোগীর অবস্থা জটিল না হলে বাড়িতে থেকেই বেশির ভাগ মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে এবং সেরে উঠছে। অনেকে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধরে নিয়েছে, পরীক্ষা করাতে যায়নি, হাসপাতালেও যায়নি। এভাবে রোগমুক্তির কিছু ধারণা বা জ্ঞান মানুষ অর্জন করেছে।

মিডিয়া: তাহলে কি সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগের আর তেমন কিছু করার নেই? মানুষ আক্রান্ত হবে, সেরে উঠবে, অল্প কিছু মানুষ মারা যাবে—অবস্থাটা কি এ রকমই দাঁড়াল?

ইমতিয়াজ আহমেদ: সরকারের সামনে একটা উভয়সংকট দেখা দিয়েছিল: একদিকে সংক্রমণ রোধ করা, অন্যদিকে মানুষের জীবিকার উপায়গুলো খোলা রাখা। মানুষ যদি উপার্জন করতে না পারত এবং সেই অবস্থা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতো, তাহলে সমস্যা আরও বেশি হয়ে যেত। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের…

মিডিয়া: সেটা পরিষ্কার; কিন্তু কোভিড মোকাবিলার এই পুরোটা সময়ে সরকার আসলে জনগণের জন্য কী করেছে? এখন কী করছে?

ইমতিয়াজ আহমেদ: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে বড় ঘাটতি আমাদের চোখে পড়েছে। কোভিড পরীক্ষায় প্রতারণা ইত্যাদি নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে, আলোচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে যে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখা গেল, তা বহু বছরের সমস্যা। কোভিড মহামারির সময়ে এসে সেগুলো আরও বড় আকারে আরও স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। তাতে হাসপাতালের ওপরে মানুষের আস্থা কমে গেছে; হাসপাতালে চিকিৎসার সীমাবদ্ধতাগুলো মানুষের চোখে পড়েছে। আবার অন্যদিকে আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সর্দি, জ্বর ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিলেই মানুষ ভয় পেয়ে হাসপাতালে দৌড়াত। কারণ, তারা মনে করত বাড়িতে এটাকে সামলানো যাবে না। কিন্তু এখন কোভিড সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান বেড়ে যাওয়ার ফলে বেশির ভাগ রোগীই মনে করছে, হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন নেই; বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েই সেরে ওঠা যাবে…

মিডিয়া: আপনি বলছিলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ মূলত শহরকেন্দ্রিক। কিন্তু সর্বশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, এখন ঢাকার বাইরের সংক্রমণ ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। পরীক্ষা কম হওয়ায় ঢাকার বাইরে সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র আমরা পাচ্ছি না। এই অবস্থা চলতে থাকলে সংক্রমণ সারা দেশে সত্যিকার অর্থেই বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই?

ইমতিয়াজ আহমেদ: সারা দেশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণগুলো আমরা জানি। সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের শুরুতে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢাকা ও আশপাশের শহরগুলো থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া; তাদের আবার ফিরে আসা; তারপর দুটো ঈদের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক মানুষের চলাচল—এসব কারণ মিলিয়ে সংক্রমণ সারা দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে। পরিসংখ্যানে যা দেখা যাচ্ছে, প্রকৃত সংক্রমণ তার চেয়ে বেশি হবে বলেই আমার ধারণা। কিন্তু যদি মৃত্যুর হারের দিকে তাকানো হয়, তাহলে দেখা যাবে সেটা এখনো তুলনামূলকভাবে কম। ঢাকার বাইরে পরীক্ষা কম হওয়ার কারণে সংক্রমণের চিত্র যা-ই হোক না কেন, মৃত্যুর ঘটনাগুলো কিন্তু লুকানো সম্ভব নয়। যদি কোভিডে অনেক লোক মারা যেত, তাহলে সেটা কোনো না কোনোভাবে অবশ্যই জানা যেত। হয়তো নানা কারণেই আমাদের মৃত্যুর হার কম থাকবে; হতে পারে আবহাওয়া; হতে পারে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা।

মিডিয়া: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের একটি প্রকল্প বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি বাংলাদেশে কোভিড মহামারিকালে একটি গবেষণা সমীক্ষা তৈরি করেছে। সেখানে এই সময়ে বেশ কিছু সামাজিক প্রবণতার চিত্র বেরিয়ে এসেছে। যেমন, কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্বজনেরা পরিত্যাগ করেছেন; ভাড়া বাসা থেকে চলে যেতে বলা বা তাড়িয়ে দেওয়া; হাসপাতালগুলোর রোগীকে প্রত্যাখ্যান করা ইত্যাদি। এই বিষয়গুলো একটু ব্যাখ্যা করবেন?

ইমতিয়াজ আহমেদ: আমাদের সমাজে এসব প্রবণতা আগেও কমবেশি ছিল। যেমন একসময়ে যক্ষ্মায় আক্রান্ত মানুষদের আশপাশে কেউ যেত না। এখনো যক্ষ্মায় আক্রান্ত মানুষদের কাছ থেকে লোকজন দূরে থাকে। আমাদের দেশে শুরুতে কোভিড-১৯ সম্পর্কে ভীষণ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যেমন কাছে গেলেই আক্রান্ত হয়ে যাবে, হাঁচি দিলেই হয়ে যাবে ইত্যাদি। ফলে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশেষত বয়স্ক মা-বাবা আক্রান্ত হলে তাঁদের পরিত্যাগ করার মতো ঘটনাগুলো। কোনো পরিবারের একজন সদস্য কোভিডে আক্রান্ত হলে সেই বাড়িটাকে বিচ্ছিন্ন করা দরকার এটা ঠিক। কিন্তু তার মানে পরিবারটিকে একঘরে করা নয়। বরং তাদের প্রতিবেশীদের সহানুভূতি, সহযোগিতা প্রয়োজন। অবশ্য আমরা এখন দেখছি যে এমন অমানবিক আচরণ করার ঘটনাগুলো কমে এসেছে। কারণ, মানুষের ধারণা বেড়েছে, ভয় কমেছে।

মিডিয়া: হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোও যে একসময় রোগীদের ভর্তি করাত না, সেটা কি এখন কমেছে?

ইমতিয়াজ আহমেদ: চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশে নয়, আরও অনেক দেশেই ভীতি কাজ করেছে। বাংলাদেশে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার ভীতিটা বেশি হওয়ার কারণ তাঁদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাব্যবস্থার ঘাটতি। পিপিই নিয়ে কী ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তা আমরা সবাই জানি। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক চিকিৎসক কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ফলে তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কাটা বাস্তব। তবে এখন তাঁদের মধ্যেও পরিবর্তন এসেছে। হাসপাতাল-ক্লিনিক রোগী ফিরিয়ে দিচ্ছে কিংবা রোগীরা হাসপাতালে হাসপাতালে ছোটাছুটি করে চিকিৎসা পাচ্ছে না, এমন খবর এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ধরে নেওয়া যায়, অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে।

মিডিয়া: অনেক বিশেষজ্ঞ এমন প্রত্যাশা প্রকাশ করেছিলেন যে জুলাইয়ের শেষ নাগাদ কোভিড সংক্রমণের প্রবণতা নিম্নমুখী হতে শুরু করবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা ঘটেনি। এখন সেটা সম্ভব কি না?

ইমতিয়াজ আহমেদ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কোভিড নিয়ে যাঁরা গবেষণা করছেন, তাঁরাসহ বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞরা বিশেষ জোর দিয়ে বলছেন যে সর্বসাধারণ পর্যায়ে কোভিডের টিকা না পৌঁছা পর্যন্ত সবাইকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে; ন্যূনতম ছয় ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করতে হবে এবং সাবান-পানি দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে। এই তিনটি পদক্ষেপের কোনো ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। বাংলাদেশে আমরা যেহেতু লকডাউনের মতো নিয়ন্ত্রণব্যবস্থায় যেতে পারছি না, সেহেতু আমাদের প্রত্যেককে এই তিনটা নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এ জন্য ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি ছাত্র-যুবসমাজ, এনজিও, পাড়ামহল্লার নেতৃস্থানীয় লোকজন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও তাঁদের লোকজনকে যুক্ত করলে আমাদের পক্ষে এসব মেনে চলা সম্ভব। এখন এভাবেই প্রত্যেককে নিজ নিজ সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।