খাদ্য-জ্বালানি কিনতে ৫ বিলিয়ন ডলার লাগবে শ্রীলঙ্কার

উন্নয়ন ডেস্ক –

চলতি বছরের মে মাসে শ্রীলঙ্কার প্রথম কোনো ঋণখেলাপি দেশ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম লেখায়। একের পর এক সংকটের মুখে দেশটির অর্থনীতিতে মুমূর্ষু অবস্থা বিরাজ করছে।

মঙ্গলবার (৭ জুন) দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জোগান দিতে আরও অর্থের প্রয়োজন শ্রীলঙ্কার। ইতোমধ্যে অর্থের ব্যবস্থা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে দেশটি।

সংসদে রণিল বলেন, ২২ মিলিয়ন মানুষের এই দ্বীপরাষ্ট্রের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আরও অর্থের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে জ্বালানি খাতে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ফুয়েল আমদানি, খাদ্যদ্রব্যে ৯০০ মিলিয়ন ডলার, সার শিল্পে ৬০০ মিলিয়ন ডলার ও রান্নার গ্যাসে ২৫০ মিলিয়ন ডলার দরকার।

ইতোমধ্যে সার কেনার জন্য ভারতের ইক্সিম ব্যাংক থেকে ৫৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়ার প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

জাতিসংঘ দেশটির খাদ্য, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে ৪৮ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া চীনের সঙ্গে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের এক সহযোগিতামূলক অর্থচুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। খাদ্য সরবরাহ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে রণিল বলেন, ‘দেশের প্রতিটি পরিবারকে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। এমনকি যাদের কোনো আয় নেই, তারাও যাতে খাবার পায় সেদিকে নজর দিতে হবে। নতুবা দেশের অনেক মানুষ না খেয়ে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মন্দির ও চার্চে দস্তুরখানা (কমিউনিটি কিচেন) খোলা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বিনামূল্যে খাবার পাবে।’

বিগত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকটকালীন সময় পার করছে শ্রীলঙ্কা। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীন হওয়ার পরে এতবড় সংকটের সম্মুখীন এর আগে হয়নি দ্বীপরাষ্ট্রটি।

সরকারি হিসাব মতে, গত মে মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশে। খাবারের দাম বেড়েছে ৫৭ দশমিক ৪ শতাংশ। বেড়েছে জ্বালানির দাম। সংকট সৃষ্টি হয়েছে ওষুধশিল্পে।

সংকট সামলাতে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের পাশাপাশি করের হার বৃদ্ধি করছে শ্রীলঙ্কা। সম্প্রতি দেশটির মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। এ ছাড়া চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে করপোরেট করের হার ২৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার কথা ভাবছে সরকার।

সূত্র: বিবিসি