উন্নয়ন ডেস্ক –
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, রিজেন্ট ও জেকেজির হাতে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা ও চিকিত্সা ঘিরে ন্যক্কারজনক জালিয়াতির ঘটনা স্বাস্থ্য খাতে লাগামছাড়া দুর্নীতির খুবই ছোট উদাহরণ। এই দুই ঘটনার দৃশ্যমান অভিযুক্তদের আটক বা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিলেই, মূল সমস্যার সমাধান হবে না। যেসব প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবানদের যোগসাজশে মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে এমন ভয়াবহ দুর্নীতি হয়েছে, গ্রহণযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর সাজা নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি।
রিজেন্ট ও জেকেজি কাণ্ডের মূল হোতাদের আটকের ঘটনাকে এসব দুর্নীতির তদন্তের প্রথম পদক্ষেপ আখ্যায়িত করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে একের পর এক দুর্নীতি, জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে। তার মধ্যে মাত্র দুটি ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পেলাম যে, প্রত্যক্ষ কর্ণধারদের আটক করা হয়েছে এবং তাকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিরাট অর্জন হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। আমরা অবশ্যই এই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এখনই একে বিরাট সাফল্য বলে মানতে পারছি না। যে প্রক্রিয়ায় আলোচ্য দুটি প্রতিষ্ঠান এই জালিয়াতি করার সুযোগ পেয়েছে তাতে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে ক্ষমতাবানদের একাংশের যোগসাজশের বিষয়টি একরকম নিশ্চিত করেই বলা যায়। অভিযুক্তদের শুধু ‘প্রতারক’ হিসেবে প্রচার করে পেছনে থাকা প্রভাবশালী, যারা তাদের এই সুযোগ করে দিয়েছে, তাদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে কিনা, সে প্রশ্ন একেবারে অবান্তর নয়।
এই দুই আলোচিত ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের পালটাপালটি দোষারোপ এবং একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টায় এই শঙ্কা আরো প্রবল হচ্ছে—এমন মন্তব্য করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ হয়েছে, কর্মকর্তারা ‘মন্ত্রীর অনুরোধে’ চুক্তি সাক্ষরের সময় উপস্থিত ছিলেন, অধিদপ্তর বলছে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ‘মৌখিক নির্দেশনায়’ তারা চুক্তি করেছে। আর মন্ত্রী জানিয়েছেন ‘তিনি অনেক চুক্তিতে সাক্ষর করেন, সব পড়ে দেখেন না’। এই যদি হয় জনস্বার্থে সরাসরি সংশ্লিষ্ট সরকারের অন্যতম প্রধান একটি বিভাগের অবস্থা তাহলে আতঙ্কিত না হয়ে উপায় থাকে না।