জুলাই ২৭, ২০২৪

আমাদের সম্পর্কে আরো জানুনঃ

চুরি করা যাবে, চোর ধরা যাবে না

উন্নয়ন ডেস্ক –

জুলাইয়ের ৬ তারিখ বিকাল পর্যন্ত মো. সাহেদ ছিলেন মানবতার কান্ডারি। যখন দেশের কোনো বেসরকারি হাসপাতাল কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি, তখন এগিয়ে আসেন সাহেদ। সরকারি হাসপাতালে যেতে যাদের অনীহা, করোনার শুরুতে তাদের একমাত্র ভরসা ছিল রিজেন্ট হাসপাতাল। সাধারণ মানুষের পক্ষে তো আর নাম বা সাইনবোর্ড দেখে হাসপাতালের মান বোঝা সম্ভব নয়। আর কোনো রোগীর পক্ষেই ভর্তি হওয়ার আগে হাসপাতালের লাইসেন্স আছে কিনা, ডাক্তার আছে কিনা, আইসিইউ আছে কিনা, মালিক টাউট কিনা- এতকিছু যাচাই করা সম্ভব নয়। মানুষ যখন দেখবে মন্ত্রী ও প্রভাবশালী সচিবদের উপস্থিতিতে রিজেন্টের মালিক সাহেদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করছেন, তখন তারা নিশ্চিন্তে সে হাসপাতালে যাবে। কিন্তু নিশ্চিন্তে গিয়ে কত মানুষ যে প্রতারিত হয়েছেন, বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পেয়েছেন, মারা গেছেন; উল্টাপাল্টা করোনা রিপোর্ট নিযে বিভ্রান্ত হয়েছেন, তার কোনো হিসাব হয়নি এখনও।

তবে পুলিশের রিমান্ডে বসে বসে প্রতারক শিরোমনি মো. সাহেদ নিশ্চয়ই ভাবছেন, ইশ, একটা মাস আগে যদি স্বাস্থ্যমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলতেন, যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরে সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিব যদি এক মাস আগে এই চিঠিটি লিখতেন; তাহলে তিনি এতদিনে মানবতায় পদক-টদক পেয়ে যেতেন, টকশোতে জাতিকে আরো অনেক নীতিকথা শোনাতে পারতেন, পুলিশ রিমান্ডে নয় ওয়েস্টিনের বারে বসে মৌজ করতে পারতেন। মাত্র একমাসের চক্করে পড়ে জাতির মো. সাহেদ এখন ৩৮ দিনের রিমান্ডে। অনেক লাইনঘাট করে আওয়ামী লীগের উপকমিটিতে ঢুকে নৌকায় উঠেছিলেন, আর র্যাব কিনা তাকে সেই নৌকা থেকেই নামিয়ে কাদামাটিতে ছেঁচড়ে গ্রেপ্তার করলো। কোমরে দড়ি বেঁধে তাতে পিস্তল গুজে দিয়ে এমন একটা ছবি তুললো, তার সারাজীবনের সব অর্জন ধুলায় মিশে গেল, সব ধান্ধাবাজি মাটি হয়ে গেল।

রাজনীতি করতে গেলে গ্রেপ্তার হতে হয়। কিন্তু সব গ্রেপ্তার এক নয়। রাজনীতির গ্রেপ্তার আর প্রতারণার গ্রেপ্তারে আকাশ পাতাল ফারাক। র্যাব এমন ছ্যাচড়া চোরের মত গ্রেপ্তার করলো, একটা ‘ভি’ চিহ্নও দেখাতে পারলেন না। গ্রেপ্তারের পর হেলিকপ্টারে ঢাকায় এনেছে, এটা ছাড়া পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো সম্মানজনক ব্যাপার ছিল না। আর এমনভাবে দিনের পর দিন রিমান্ডে নিয়ে তাকে টর্চার করছে, যেন তিনি দাগী আসামি বা ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। সাহেদ বলতে পারেন, আমার হাসপাতালে দুই নম্বরী ছিল মানছি। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো হাসপাতালে দুই নম্বরী নাই? তিনি সরকারি দলের নেতা, বঙ্গভবন, গণভবন, সচিবালয় সব জায়গায় তার অবাধ বিচরণ। তিনি একজন টক শো সেলিব্রেটি। সাংবাদিকরা তার গ্লাসফ্রেন্ড, অনেকের সাথেই তার গলায় গলায় খাতির। আজ তিনি যখন ফাঁদে পড়েছেন; তখন কেউই তার পাশে দাঁড়ালো না। যেন তাকে কেউ চেনেই না। আবারও আফসোসে তার মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছা করলো, ইশ, এই চিঠিটা কেন একমাস আগে এলো না।

সাহেদদের মতো চোরদের লাইফলাইন হয়ে আসা এই চিঠিটি ইস্যু হয়েছে গত ৪ আগস্ট। আর রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান হয়েছে ৬ জুলাই। আগে চিঠি প্রসঙ্গে একটু বলে নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত চিঠিতে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনায় বিরত থাকতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনা করতে হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পরামর্শ এবং তাদের সাথে সমন্বয় করে তা করতে হবে। তার মানে অভিযানের আগে সবাইকে জানাতে হবে, আমরা কিন্তু আসছি, তোমরা তৈরি হও। জানিয়ে-শুনিয়ে, সমন্বয় করে, পরামর্শ করে সাহেদদের মত চোরদের ধরা যায় না। এদের ধরতে হয়, আচমকা অভিযানে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই অবস্থানের কারণও ব্যাখ্যা করা আছে চিঠিতে, ‘করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পরে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালসমুহে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যগণ নানা বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করাতে তাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমুহে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।‘

চিঠির এই অংশটি বিভ্রান্তিকর। প্রথম কথা হলো, করোনা মহামারীর সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোনো হাসপাতালে অপ্রয়োজনে অভিযান চালিয়েছে, এমন অভিযোগ এখনও কেউ করেনি। এখন বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেবার নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করবে, মানুষের পকেট কাটবে, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে আর তাদের কিছু বলা যাবে না! মানে তারা চুরি করতে পারেব। কিন্তু চোর ধরতে হলে আগে পরামর্শ ও সমন্বয় করতে হবে। দেশটা মগের মুল্লুক হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া কোনো হাসপাতালে একইদিনে একাধিক বাহিনী অভিযান চালিয়েছে, এসন খবরই পাইনি। তবে রিজেন্টের মতো হাসপাতালে সকাল-বিকাল অভিযান চালালেও আমাদের সমস্যা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অসুবিধা থাকতে পারে। কারণ সাহেদরা তো তাদের অনুমতি নিয়েই সবার চোখের সামনে হাসপাতালের নামে প্রতারণার দোকান খুলে বসেছিলেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কোনো হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে, এমন খবরও পাইনি। বরং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানের সময় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বিষয়টি মাথায় রেখেছে। প্রয়োজনে তাদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে। যেমন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চালিয়েছে বলেই তো রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে রোগীরা অন্য হাসপাতালে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। নইলে তো তাদেরকে এখানেই বিনা চিকিৎসায় ধুকতে হতো। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমুহে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে, এই বক্তব্যের সাথে আমি ষোল আনা একমত। চুরির বিরুদ্ধে অভিযান চালালে চোরেরা তো অসন্তুষ্ট হবেই। আর সেই চোরদের মাসতুতো ভাই হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাই চোরে চোরে মাসতুতো ভাইয়েরা মিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানই বন্ধ করে দিল। এখন হাসপাতালগুলো নিশ্চিন্তে চুরি করবে, মানুষের গলা কাটবে। আর তাদের মাসতুতো ভাই স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ তাদের পাহাড়া দেবে। বাহ বাহ।

আমরা সাধারণ মানুষ চাই, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলুক। কারণ তাদের অভিযানের কারণেই জেকেজি, রিজেন্ট, সাহাবুদ্দিন, ট্রমা সেন্টারের গোমর ফাঁস হয়েছে। যদি এই চিঠিটি একমাস আগে লেখা হতো, তাহলে এই হাসপাতালগুলো আগের মতই তাদের দুই নাম্বারি চালিয়ে যেতে পারতো। আমরা জানি, রিজেন্ট বা সাহাবুদ্দিনের মত আরো অনেক হাসপাতাল আছে আমাদের আশপাশেই। তাই তারা তাদের মধ্যে নিছক চাপা অসন্তোষ নয়, রীতিমত আতঙ্ক ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকলে, হাসপাতাল নামের সেই কসাইখানাগুলোর মুথোশ উন্মোচিত হতে পারতো। স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলে আপাতত সেই রাস্তা বন্ধ করেছেন।

হাসপাতালগুলো এখন যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে, তাদের আর ধরার কেউ রইলো না। তবে আমি মানছি, হাসপাতালে অভিযান চালানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মূল কাজ নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘পরিচালক (হাসপাতাল)’ নামে একটি পদ আছে। তিনি যদি ঠিকমত দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযান চালাতে হতো না। ঠিকমত দায়িত্ব পালন তো দূরের কথা অধিদপ্তর উল্টা কাজ করে। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম একদিন অভিযান চালিয়েই বুঝে গেলেন, রিজেন্ট আসলে কোনো হাসপাতালই না। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রিজেন্ট পরিদর্শন করে সেখানে চিকিৎসার সুষ্ঠু পরিবেশ দেখতে পেয়েছিল। এখন যদি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শক এসে বলতেন, এটি কোনো হাসপাতালই না। তাহলে তো আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযানই চালাতে হতো না। র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেটের চোখে যেটি হাসপাতালই না, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শক কীভাবে সেখানে চিকিৎসার পরিবেশ খুজে পেলেন?

রিজেন্ট বা সাহাবুদ্দিন নয় শুধু আমাদের চোখের সামনে তথাকথিত ফাইভ স্টার মানের হাসপাতালগুলো যে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের গলা কাটছে, সে ব্যাপারে কি স্বাস্ধ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর কখনো কোনো বিহীত করেছে? এখন যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো অভিযান চালাতে যায়, তাহলে আবার তাদের আতে ঘা লাগবে, চাপা অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। আনোয়ার খান মডার্নের ভৌতিক বিল নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। আমি দুটি অভিজ্ঞতার কথা লিখছি। গত জুনে রেলওয়ের শ্রমিক লীগের সভাপতি এডভোকেট হুমায়ুন কবির করোনা আক্রান্ত হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি সাধারণ কেবিনে ছিলেন। মানে তার আইসিইউ বা ভেন্টিলেশন লাগেনি। ১৪ দিনে তার বিল হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার টাকা। করোনা রোগীদের ঔষধ কী স্বর্ণ দিয়ে মোড়ানো থাকে? একজন করোনা রোগীর পেছনে গড়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা খরচ করা কীভাবে সম্ভব? এডভোকেট হুমায়ুন কবিরের ছোট ভাই কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানও একা সময়ে করোনা নিয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। ল্যাবএইড অবশ্য ছোট ডাকাত। সেখানে ১৪ দিনে বিল এসেছিল ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা। তবে ল্যাবএইডের ডাকাতিটা আরো অভিনব। এই দুই রোগীই আমার স্বজন। আমিই তাদের হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ছিলাম। মাহফুজ বাসায় ফেরার পর আমাকে ফোন করে বললো, হাসপাতালের বিলে অক্সিজেন বাবদ ২ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। অথচ আমার তো কোনো অক্সিজের লাগেনি। আমি বললাম, বাদ দে। তুই ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা বিল দিছিস। আর ২ হাজার জন্য কথা বলে লাভ কি। কিন্তু তার কথা হলো, জেনুইন বিল হলে আপত্তি নেই। কিন্তু এটা তো দিনে দুপুরে ডাকাতি। সে এটা
মানবেই না। তার ছেলেকে পাঠালো হাসপাতালে। প্রথমে তো পাত্তাই দিলো না। বিল হয়ে গেছে, পেমেন্ট হয়ে গেছে। এখন আর কথা বলার কিছু নেই। সেই ছেলে যখন অক্সিজেনের হিসাব চাইলো তখন কেচো খুড়তে বেরিয়ে এলো প্রতারণার অ্যানাকোন্ডা। রোগী ভর্তি হয়েছে রাত ১১টায়। আর হাসপাতালের কাগজে অক্সিজেন দেয়ার সময় দেখানো হয়েছে সেদিনই দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। লজ্জা পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত আগের বিলটি নিয়ে ২ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়ে নতুন বিল ধরিয়ে দেয়। এই দুইটা বিলের খবর আমি জানি, কারণ দুজনই আমার স্বজন। আমিই বলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ছিলাম। কিন্তু এমন আরো কত মানুষ যে সুস্থ হতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন, তার খবর কে রাখে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণে হাসপাতালগুলোতে ‘চাপা অসন্তোষ’ বিরাজ করছে। আর তাদের কর্মকান্ডে যে আমাদের মানে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কি সাধারণ মানুষের তীব্র অসন্তোষটা আমলে উচিত নয়? কিন্তু সাধারণ মানুষের অসন্তোষ নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চাপা অসন্তোষেই তারা কাবু।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আইনশৃঙ্খলঅ বাহিনীর অভিযানের বিকল্প হিসেবে বলা হয়েছিল, ‘ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের একজন যুগ্মসচিবপর্যায়ের একজন কর্মকর্তাও সদস্য হিসেবে আছেন।‘ এই টাস্কফোর্স যে কতটা ঠুটো জগন্নাথ, তার একটি উদাহরণ দিয়েই লেখাটি শেষ করছি। রিজেন্ট হাসপাতাল ধরা খাওয়ার পর দেখা গেল এই হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা নেই। এই নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ। কিন্তু পরে জানা গেল, বাংলাদেশে বেশির ভাগ হাসপাতালেরই লাইসেন্স নবায়ন করা নেই। গত ৮ আগস্ট টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে সকল হাসতালকে তাদের লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। নইলে হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হবে। পরদিনই মানে ৯ আগস্ট হাসপাতাল মালিকরা ছুটে গেলেন তাদের মাসতুতো ভাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।

পরে সিদ্ধান্ত হলো, ২৩ আগস্টের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন নয়, নবায়নের আবেদন করতে হবে। ব্যস আবেদন করো এবং তা বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানও হবে না। টাস্কফোর্সের কঠোর সিদ্ধান্তও পাল্টে যাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। তার মানে বেসরকারি হাসপাতালগুলো যা ইচ্ছা তাই করবে, কেউ তাদের কিছু বলতে পারবে না। যাক আমরা জানি বাঁচানোর মালিক একমাত্র আল্লাহ। রাখে আল্লাহ মারে কে। আল্লাহ ভরসা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Pinterest
Reddit