ছাড়েনি সময়মতো ট্রেন, ভোগান্তিতে ঈদযাত্রীরা

উন্নয়ন ডেস্ক –

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল বুধবার ট্রেনে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই এলোমেলো ট্রেনের সময়সূচি। সময়মতো ট্রেন না ছাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। ঈদে সব রেলে নারীদের জন্য আলাদা দুটি করে বগি রাখার কথা থাকলেও তা ছিল না।

গতকাল কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু সকাল ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে ৬টা ৫৫ মিনিটে। চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ৭টায় ছেড়ে গেছে।

খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এই ট্রেন ছেড়েছে যায় ৮টা ৪৭ মিনিটে। রংপুর এক্সপ্রেসের সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও তা এক ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে স্টেশন ছাড়ে। জামালপুর এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ১০টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে ১০টা ৪৫ মিনিটে। রাজশাহী কমিউটার ১২টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও গেছে দুপুর ১টা ৪৬ মিনিটে। বনলতা এক্সপ্রেস আধাঘণ্টা দেরিতে দুপর ২টার সময় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়।

কথা হয় রংপুরগামী ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী সাইফুল মিয়ার সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পরিবারের লোকজন নিয়ে স্টেশনে বসে আছি। ট্রেন কখন ছাড়বে তার কোনো ঠিক নাই। ট্রেনের লেট করার অভ্যাস আর গেল না। খোঁজ নিতে গিয়ে স্টেশনে মাস্টার-ম্যানেজার কাউকে পেলাম না। ’

গতকাল ছিল ঈদকেন্দ্রিক ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির শেষ দিন। গতকাল আগামী ১ মের টিকিট বিক্রি করা হয়। কমলাপুরের টিকিট কাউন্টারগুলোতে গত চার দিনের তুলনায় গতকাল ভিড় কম ছিল, কিন্তু কাউন্টার থেকে টিকিট কিনতে যাত্রীদের লম্বা সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। গতকালও সার্ভার স্লো হওয়ার কারণে কাউন্টারে টিকিট ইস্যু করতে সময় লেগেছে। অনলাইনে টিকিট নিতে পারছেন না বলে অনেক যাত্রী অভিযোগ করেন।

শ্যামলীর বাসিন্দা মো. হোসেন বলেন, ‘দুই দিন চেষ্টার পর আজকে (বুধবার) টিকিট কাটতে পেরেছি। গতকালও টিকিট না নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। শুধু একটু আরামে যাওয়ার আশায় এই ভোগান্তি মেনে নিতে হচ্ছে। বাসে গেলে রাস্তায় যে কী হতে পারে, সেটা ভেবেই ভয় লাগে। ’

স্টেশনে যাত্রীদের অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে চাইলে ব্যবস্থাপক ও মাস্টারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেউ-ই তাঁদের কক্ষে ছিলেন না। এমনকি স্টেশনেও দেখা যায়নি। তাঁদের মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল।

ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন ৩৮ জোড়া আন্ত নগর রেলে ২৬ হাজার ৬৬৩টি আসনে যাত্রী পরিবহন করা হবে। এ ছাড়া ছয় জোড়া বিশেষ রেল চালু করা হয়েছে। এতে আরো প্রায় দুই হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে।

আন্ত নগর, লোকাল ও কমিউটার মিলিয়ে ঢাকা থেকে প্রতিদিন ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহনের আসন সক্ষমতা রেলওয়ের রয়েছে। সেই হিসাবে পাঁচ দিনে আড়াই লাখ যাত্রী আসনে পরিবহন করা যাবে। এর সঙ্গে আরো আড়াই লাখ মানুষ দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।