উন্নয়ন ডেস্ক –
আরিফিন শুভ’র গেটাপ আমার কাছে একদম ঠিক, যথার্থ মনে হয়েছে। লং শটে দেখে মনে হয়েছে যেন বঙ্গবন্ধুই দাঁড়িয়ে আছেন। আমি আসলে সিনেমাটার ট্রেলার দেখেছিলাম একজন সাংবাদিকের মোবাইলে। ওই সাংবাদিক আমাকে যখন ট্রেলার দেখালেন তখন আমার কাছে ভালোই লেগেছে।
আমরা অনর্থক সমালোচনা করছি এটা নিয়ে।
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক “মুজিব : দ্য মেকিং অফ আ নেশন” ট্রেলার প্রকাশ নিয়ে যে সমালোচনা জবাব দিতে গিয়ে কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বললেন দেশের প্রবীন নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। তিনি একাধারে পরিচালক, প্রযোজক, গীতিকবি, সুরকার, চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার, চলচ্চিত্র সম্পাদক, চিত্রগ্রাহক, সঙ্গীত পরিচালক এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। তিনি একাধারে পরিচালক, প্রযোজক, গীতিকবি, সুরকার, চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার, চলচ্চিত্র সম্পাদক, চিত্রগ্রাহক, সঙ্গীত পরিচালক
৭ মার্চের রেসকোর্স ময়দানের ভাষণে উপস্থিত ছিলেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বসে গান গেয়েছেন- এমনটাই জানিয়ে বললেন, ‘‘ তখন আমাদের বাসা ছিল চকবাজার। আমরা স্বশরীরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে রেসকোর্স ময়দানে যাই। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে আমাদের রক্ত আন্দোলিত হয়েছে বলেই মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুকে আমি কাছ থেকে দেখেছি। একইমঞ্চে বসে গান গেয়েছি। কাদেরী কিবরিয়া, আব্দুল জব্বার, ফরহাদসহ গান করেছি, বঙ্গবন্ধু শুনেছেন। আমার মনে আছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে তিনকোনা একটু পুকুরঘাটের পাশে শেখ সেলিমের তত্ত্বাবধানে একটা সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বঙ্গবন্ধু আসেন। মঞ্চে বসেন। কাদেরী কিবরিয়ার রবীন্দ্র সংগীত শুনে প্রশংসা করেন। আমাকে বলেন,‘কিরে তুই কি গান গাইবি না?’’
তাছাড়া বঙ্গবন্ধুকে আমি কাছ থেকে দেখেছি। একইমঞ্চে বসে গান গেয়েছি। কাদেরী কিবরিয়া, আব্দুল জব্বার, ফরহাদসহ গান করেছি, বঙ্গবন্ধু শুনেছেন
দেশীয় নির্মাতাদের দিয়েও বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক নির্মাণ করা যেত বলে মনে করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। ঝন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অনেক ভালো নির্মাতা রয়েছেন বাংলাদেশে। যেমন মরহুম আজিজুর রহমান, যদিও উনি চলে গেলেন। কাজী হায়াত ছিলেন, আলমগীর সাহেব ছিলেন, হয়তো তারাও ভালো নির্মাণ করতে পারতেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেহেতু মনে করেছেন শ্যাম বেনেগাল ভালো করতে পারেন। তাই উনাকে দিয়েছেন। আমি মনে করি উনি যেটা নির্মাণ করতে চেয়েছেন সেটা পেরেছেন। উনাকে নিয়ে সমালোচনার কিছু নেই। ’
“মুজিব : দ্য মেকিং অফ আ নেশন” সিনেমার ট্রেলার নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, তারা অনর্থক সমালোচনা করছেন বলে মনে করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। মঙ্গলবার বিকেলে কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমি ট্রেলার দেখে বুঝেছি, একটা সিনেমাতে মূলত যা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, সেটা বোঝাতে পারলেই হলো। বঙ্গবন্ধু সিনেমায় শুভর গেটআপ আমার ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে যেন বঙ্গবন্ধুই দাঁড়িয়ে আছেন। আর চশমার ভুল যেটা ধরা হচ্ছে, সেটা দৃশ্য পরিবর্তন হলে, হতেই পারে। এছাড়াও মাইক্রোফোনের ভুল রয়েছে। হ্যাঁ, এমনকিছু ভুল রয়েছে। এসব ছাড়াও আমার কাছে ভালো লেগেছে ট্রেলার। যেটা শো করার চেষ্টা করা হয়েছে সেটা আছে। ’
‘আমি ট্রেলার দেখে বুঝেছি, একটা সিনেমাতে মূলত যা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, সেটা বোঝাতে পারলেই হলো। বঙ্গবন্ধু সিনেমায় শুভর গেটআপ আমার ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে যেন বঙ্গবন্ধুই দাঁড়িয়ে আছেন
দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র বন্দুক, এবং এটি মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালে। মার্চ ২০২১-এর হিসাব অনুযায়ী, চার দশকেরও বেশি কর্মময় জীবনে তিনি ৭৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন, যা বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে কোনো একক পরিচালকের সর্বাধিক চলচ্চিত্র পরিচালনা এবং সাড়ে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের জন্য চিত্রনাট্য লিখেছেন। তার সর্বশেষ পরিচালিত চলচ্চিত্র তুমি আছো তুমি নেই, যা ২০২১ সালে মুক্তি পায়।