পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম ১৪ লেনের মহাসড়ক, যার ৮টি এক্সপ্রেসওয়ে। এটি হতে যাচ্ছে আধুনিক ঢাকার নতুন গেইটওয়ে। মহাসড়কের দুপাশে রয়েছে ১০০ ফিট খাল। সাড়ে ১২ কিলোমিটার এ সড়কে থাকবে পাঁচটি এ্যাডগ্রেড ইন্টারসেকশন। নান্দনিক এ সড়ক ধরেই তৈরি হচ্ছে পূর্বাচল স্যাটেলাইট সিটির নকশা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই এ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের অধীনে নির্মিত এ সড়কপথে শেষ সময়ে চলছে লাইটপোস্ট আর রোড মার্কিংয়ের কাজ। প্রধান সড়ক আট লেন, প্রধান সড়কের লেন হবে ৩.৬৫ মিটার; সাথে থাকবে সাড়ে তিন মিটারের চার লেনের সার্ভিস সড়ক। এদিকে, কুড়িল থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ১২.৩০ কিলোমিটার সড়কে প্রথম ভাগে কুড়িল হয়ে বালু নদী পর্যন্ত ১২ লেনে হবে ৫.৫২ কিলোমিটার সড়ক। বালুনদী থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ১০ লেনের সড়ক হবে ৬.৬৩ কিলোমিটার। প্রধান সড়ক ছয় লেন, আর সার্ভিস সড়ক চার লেন। প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে যুক্ত হবে আরো দুটি লেন। সব মিলিয়ে পুরো পথ হবে চৌদ্দ লেনের। তবে শুরু থেকে শেষ, পুরো পথে পাঁচটি এ্যাডগ্রেড ইন্টারসেকশন সার্ভিস লেনকে যুক্ত করবে মূল সড়কের সঙ্গে। তবে এটি যে দৃষ্টিনন্দন নকশায় করা হয়েছে, তা সবার আগে নজর কাড়বে। এছাড়া এ সড়ক কেবল ঢাকার গেইটওয়েই নয়, দিয়েছে পূর্বাচল স্যাটেলাইট সিটির আগামীর পথের তকমাও। রাজউক এর চেয়ারম্যান বলেন, ‘পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সময় অনুযায়ী সেপ্টেম্বরেই উদ্ভোধন হবে বাংলাদেশের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ে যা ঢাকার যাতায়াতের নতুন গেটওয়ে হবে। সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মনোয়ার ইসলাম সরদার বলেন, ১২.৩ কিলোমিটার সড়কের সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও দুটি লেন যুক্ত হয়ে মোট ১৪ লেনের সড়ক হবে। এটি একটি নান্দনিক সড়ক হয়েছে। এটি পূর্বাচল স্যাটেলাইট শহরকে ঢাকার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কোয়ালিটির সঙ্গে কখনোই কোনো আপোস করি না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের নির্মাণ করা এ সড়ক পথে রয়েছে ১৩টি ব্রিজওভার ক্যানেল। এ পথ ধরে চলা ছটি নদীর ওপর প্রশস্ত করা হয়েছে ছয়টি ব্রিজ। এ মুহূর্তে চলছে শেষ সময়ের কাজ। ইন্টারসেকশনের পানি সরাতে বিশেষ মোটর বসানো শেষ। সড়কটির শেষ প্রান্তে চলছে লাইটপোস্ট বসানোর কাজ। রোড় মার্কিং হলেই আপতত সব কাজ শেষ। তবে প্রকল্পটি রাজউকের কাছে হস্তান্তর করা হবে ডিসেম্বরে। পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শেখ আহমেদ শাফি বলেন, দুটি খাল রয়েছে, যার দুপাশে যাতায়াতের জন্য ১৩টি ব্রিজওভার ক্যানেল রয়েছে। এছাড়াও বালু ব্রিজসহ মোট ৬টি ব্রিজকে প্রশস্ত করা হয়েছে। এছাড়া পুরো পথে ছটি ফুটওভার ব্রিজের নকশাও এ পথকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন, এমন সড়ক শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়াতেও প্রথম। এ পথ শুধু বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজই করবে না, পরবর্তীতে যেকোনো সড়ক কিংবা মহাসড়ক নির্মাণে এ পথ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেও জানান তারা।