দেশের ১৭ নদীর পানি বিপদসীমার উপরে, চরম দুর্ভোগে পানিবন্দি মানুষ

উন্নয়ন ডেস্ক –

দেশের ১৭টি নদীর ২৮টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপরে বইছে পানি। নদ-নদীর পানি বাড়ায় মধ্যাঞ্চলে বন্যার আরও অবনতি হয়েছে। উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি স্থানের পানি কমতে শুরু করলেও খাবার, পানিসহ নানা সংকটে দুর্গতরা। তবে কিছুটা উন্নতি হয়েছে মানিকগঞ্জ ও ফরিদপুরের বন্যা পরিস্থিতি।
টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। বিপদসীমার উপরে বইছে পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ ১৭ নদীর পানি। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রাজবাড়ীতে বন্যার চরম অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি অসহায় দিন কাটাচ্ছে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের। শহররক্ষা বাঁধে দেখা দিয়েছে ফাটল।

শরীয়তপুরে বন্যার পানিতে নড়িয়া-জাজিরা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় দুই উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্টের আশংকায় কৃষক।

এদিকে, মাদারীপুরে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলিজমি, রাস্তাঘাট। আর, পদ্মার পানি বাড়ায় মুন্সীগঞ্জে বন্যার অবনতি হয়েছে। জেলায় ১৬টি ইউনিয়নের ১০৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া, সিরাজগঞ্জে বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি, রাস্তা ও বাঁধ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চারটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন এবং তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক তলিয়ে গেছে। অর্ধ লক্ষাধিক তাঁত পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক-ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে, নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদীর পানি বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আর, পাবনায় পদ্মা ও যমুনার পানি না কমায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অনেক গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি আছেন অনেক মানুষ।

এদিকে, ফরিদপুরে সুপেয় পানি, খাবারের সংকটে পড়েছেন দেড় লাখ মানুষ। পানিতে চরাঞ্চলের সঙ্গে শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তাছাড়া, মানিকগঞ্জে সব উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে রাস্তা-ঘাট, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, ডুবে গেছে শাক-সবজিসহ নানা ফসল।

আর, টাঙ্গাইলে বন্যার পানিতে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। খোলা আকাশের নিচে দিন কাটছে অনেকের। ত্রাণের আশায় আছেন অনেক মানুষ। এছাড়া, শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ৩০টি গ্রাম। শেরপুর-জামালপুর মহাসড়ক ডুবে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে, টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জে নতুন করে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তাহিরপুরের সাথে উপজেলার অন্য জায়গার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এছাড়া কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা, জামালপুরে পানি কমতে থাকলেও কমেনি দুর্ভোগ। দুর্গত এলাকায় মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এখন নৌকা। কাজ না থাকায় কর্মহীন হয়ে অর্থসংকটে পড়েছেন অনেকে।