ডেস্ক প্রতিবেদন:
পহেলা ফাল্গুন, ভ্যালেন্টাইন’স ডে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে জমে উঠেছে দেশের ফুলের বাজার। ফুলের বাগানি থেকে পাইকারি ক্রেতা বা দোকানি সবাই এখন ব্যস্ততার মধ্যে পার করছেন ফেব্রুয়ারি মাসের এ সময়টা। ফুল চাষীরা আশা করছেন, ভালো দাম পাবেন এবার। তবে শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ীরা জানালেন, বিদেশ থেকে কৃত্রিম ফুলের আমদানি নিরুৎসাহিত করা গেলে তাজা ফুলের চাহিদা আরো বাড়বে এবং চাষীরা তাতে উপকৃত হবে।
এদিকে, ব্রক্ষ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবদি, দীঘলদি ও মাধবপাশাসহ আট দশটি গ্রামে প্রায় চারশ’ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ হচ্ছে গত এক দশক ধরে। বাগান মালিকরা এ মৌসুমে অন্তত বিশ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন।
একই রকম আশার কথা জানালেন সাভারের ফুল চাষিরা। সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ও তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নে ৩০ থেকে ৩৫টি গ্রামের প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে। এ মৌসুমে প্রায় ৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন ফুলচাষীরা।
ওদিকে, ‘ফুলের রাজধানী’ বলে খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে এ মৌসুমে গোলাপের দাম রেকর্ড ভেঙেছে। প্রতি পিস ১৮ টাকায় বিক্রি করছেন চাষীরা। গোলাপের রেকর্ড পরিমাণ দাম পেলেও খুশি নন চাষীরা। কুঁড়ি পচা রোগ ও বৈরী আবহাওয়ায় গোলাপ উৎপাদনে ধস নেমেছে বলে দাবি গদখালি এলাকার ফুলচাষীদের। এ জন্যই চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।
গদখালির আড়তদাররা জানালেন, গতকাল স্থানীয় বাজারে প্রতি পিস গোলাপ ১৮ টাকা, রজনীগন্ধা দুই থেকে চার টাকা, গ্লাডিওলাস তিন থেকে আট টাকা, জারবেরা পাঁচ থেকে ১৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা দুই থেকে তিন টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়াও গাঁদা ফুল প্রতি হাজার এক শ’ থেকে দেড় শ’ টাকা, জিপসি ও রথস্টিক ফুল মানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা আঁটি বিক্রি হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, জেলা চলতি বছর প্রায় ২০৮ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন ব্যয় কম, আবার লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। চাষীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কোন সময় কী ফুল চাষ করতে হবে; কীভাবে ফুলের পরিচর্চা করলে উৎসবের মৌসুমে ভালো দাম পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ ফাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ফুলের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এ ছাড়াও গোলাপক্ষেতে ভাইরাস লেগে উৎপাদনে ধস নেমেছে। ভাইরাসের আক্রমণে গোলাপের কুঁড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য চাহিদার তুলনায় গোলাপ মিলছে না। সরবরাহ কম থাকায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তারপরও কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। #
জমে উঠেছে দেশের ফুলের বাজার
আজ পহেলা ফাল্গুন , বসন্তের প্রথম দিন