উন্নয়ন ডেস্ক –
জুলাই ২৫, ২০২০
বিদেশ গমনেচ্ছুদের করোনা পরীক্ষার জন্য যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করতে বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্র। এক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে দীর্ঘলাইন একদিকে বিদেশগামীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত তাদের থাকতে হচ্ছে উদ্বেগে।
গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী ও বন্যার্ত জেলাগুলোয় ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কেউ কেউ অভিযোগ করছে নমুনা দেয়ার পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে সংক্রমিত হলে তা বিদেশে নমুনা পরীক্ষায় ধরা পড়তে পারে। তখন প্রাপ্ত সনদ কাজে আসবে না বা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। তাই বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষায় একটি যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করা দরকার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নমুনা গ্রহণ এবং রিপোর্ট প্রদান করে তাদের উদ্বেগ কমানোর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের নজর দেয়া জরুরি। পাশাপাশি নমুনা দেয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ অপেক্ষার পরিবর্তে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং বিদেশগামীদের জন্য বুথের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো না করে আগেভাগে তত্পর হওয়া উচিত। রিপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ না করে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের রিপোর্ট আগে বা স্বল্প সময়ে দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। আমি বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি বলেন, করোনা সংক্রমিত বিশ্বের প্রতিটি দেশই চেষ্টা করে যাচ্ছে সংক্রমণ রোধে। প্রতিটি দেশেরই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সমৃদ্ধিশালী দেশগুলো মহামারী নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশও মহামারী নিয়ন্ত্রণে এবং জনগণকে সুরক্ষা দিতে নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রাণান্ত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার সীমাবদ্ধতা দূর করে সংক্রমণ রোধ, চিকিৎসা নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ, অসহায় ও কর্মহীনদের সুরক্ষা এবং চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহ করতে নিরলস কাজ করছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এ মহামারী থেকে সুরক্ষায় সচেতনতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার—এ সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরিধান সরকার বাধ্যতামূলক করেছে। সামাজিক দূরত্ব তথা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সচেতনতা দুর্গ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের নিজেকে, পরিবার এবং সমাজকে সুরক্ষা দিতে হবে।
বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, করোনাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যখন বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে, তখন বিএনপি মানুষের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, উল্টো মানবিক সংকটকে পুঁজি করে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে অপরাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। যারা দুর্যোগ-দুর্বিপাক ও সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না, কেবল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে, তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
তিনি বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রত্যাখ্যাত হয়ে তারা অপরাজনীতির অন্ধকারের গিরিখাতে দিকভ্রান্ত পথহারা পথিকের মতো প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার ও চাতুর্যপূর্ণ কথামালা ব্যবহার করে প্রেস ব্রিফিংনির্ভর গলাবাজির রাজনীতি করছে বিএনপি।
গলাবাজির দিন শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশে জনগণ এখন অনেক সচেতন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। জনগণ জানে বৈশ্বিক মহামারী ও দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা ও পরবর্তী অর্থনৈতিক গতিশীলতা পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।