নাক দিয়ে রক্ত পড়লে করণীয়

উন্নয়ন ডেস্ক –

অনেকের হঠাৎ নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। তবে এতে ভয়ের কিছু নেই। কিছুক্ষণ নিয়ম মেনে নাক চেপে ধরে রাখলে সাধারণত রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়।

নাক দিয়ে রক্তপাত কোনো রোগ নয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে– রক্তপাতের কারণ জানা। কারণ জেনে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে পরবর্তী সময়ে রক্ত পড়ার আশঙ্কা অনেকাংশে থাকে না।

নাক দিয়ে রক্তপাত দুই ধরনের হতে পারে

নাকের সামনের দিক থেকে ও পেছনে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে দেখা যায় রক্তপাত সামনের দিক থেকে আসে।

রক্তপাত কেন হয়?

নাকে অনেক রক্তনালি থাকে, যা নাকের ঝিল্লি আবরণে এমনভাবে থাকে একটু আঘাত লাগলেই রক্তপাত হতে পারে। সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়ায় এ সমস্যা বেশি হতে পারে। তবে কারণ খুঁজে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ উচিত।

নাক হচ্ছে– শরীরের একটি উচ্চ রক্তসংবাহী প্রত্যঙ্গ। ছোট্ট এই নাকের ভেতর রয়েছে অসংখ্য রক্তনালি ও কৈশিকনালির জাল। তাই অতিসামান্য কারণেই এ সংবেদনশীল নাক দিয়ে রক্তপাতের ঘটনা ঘটে। রক্তপাত নাকের উভয় ছিদ্র বা এক ছিদ্র দিয়ে আসতে পারে।

নাক দিয়ে রক্তপাত সবচেয়ে বেশি দেখা যায় শিশু ও বয়স্ক মানুষের। নাক দিয়ে রক্তপাতের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে- জন্মগত কারণ। নাকে আঘাত পাওয়া, নাকে ঘুষি লাগা, নাক খোচানো, নাকের ভেতর বিভিন্ন ধরনের অপারেশন এবং মুখের উপরিভাগে আঘাত পাওয়া ও দুর্ঘটনা প্রভৃতি।

টিউমার বা ক্যান্সার, ধোয়ার আঘাত, উঁচু স্থান, অতিরিক্ত গরম ও ঠাণ্ডা। আর নাকের মধ্যবর্তী দেয়াল বাঁকা ও পলিপ।

এ ছাড়া বয়স্কদের উচ্চরক্তচাপ, গর্ভাবস্থায়, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃত কিডনি এবং রক্তকনিকার বিভিন্ন ধরনের অসুখের কারণে নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে।

প্রাথমিক চিকিৎসা

নাক দিয়ে রক্ত পড়লে এর কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা রয়েছে।

১. নাক দিয়ে হঠাৎ রক্ত পড়লে চেয়ারে সোজা হয়ে বসে থেকে মাথাটা সামনের দিকে সামান্য হেলে থাকুন। এতে রক্ত পেছন দিক দিয়ে গলায় বা পেটে চলে না যায়।

২. হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনী দ্বারা নাকের সামনের অংশ ৫-১০ মিনিট চেপে ধরুন। মুখ দিয়ে স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিন। রক্ত পেছনের দিকে গেলে গিলবেন না। মুখে চলে এলে থুতু দিয়ে গামলায় ফেলুন।

৩. রুমাল বা তাওয়াল দিয়ে পেছিয়ে নাকের ওপরের অংশে বা দুই ভ্রুর মাঝে একটু নিচে চেপে ধরুন।

প্রাথমিক চিকিৎসায় রক্ত পড়া বন্ধ না হলে নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

লেখক:
নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন
সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।