নিউইয়র্কে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে আন্দোলনের শপথ

উন্নয়ন ডেস্ক –

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিউইয়র্কে বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে দোয়া-মাহফিল, আলোচনা সভা এবং তবারক বিতরণের কর্মসূচি পালন করা হয়। ২৯ এবং ৩০ মে জ্যাকসন হাইটসে এসব কর্মসূচিতে শতশত নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে। এক পর্যায়ে তারা বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং বিএনপির অপর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের স্লোগান দেন। এসময় তারা আন্দোলনের শপথ করেন।

এ উপলক্ষে সবচেয়ে বড় র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয় ২৯ মে রবিবার অপরাহ্নে ডাইভার্সিটি প্লাজায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, জাসাস, যুবদল, শ্রমিক দল, মহিলা দল, ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদি ফোরাম আর মুক্তিযোদ্ধা দলের সম্মিলিত উদ্যোগে। এতে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক গিয়াস আহমেদ। পরিচালনা করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক এম এ বাতিন। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং জাসাসের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম দুলাল, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা বাবুল, সহ-সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব বাবর উদ্দিন, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির নেতা আলহাজ্ব মাহফুজুল মাওলা নান্নু এবং মাওলানা অলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো ছিলেন বিএনপি নেতা সৈয়দা মাহমুদা শিরীন, আনোয়ার হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ, সৈয়দ এম রেজা, আলহাজ্ব আবু তাহের, বিএনপি নেতা এবং বাংলাদেশ সোসাইটির আসন্ন নির্বাচনের জন্যে গঠিত কমিশনের প্রধান এডভোকেট জামাল আহমেদ জনি, বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক শাহীন, আবুল বাসার, সাইদুর রহমান সাঈদ, হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, কাওছার আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার রহমান সায়েম এবং সদস্য-সচিব জাহাংগীর সোহরাওয়ার্দি, রিয়াজ মাহমুদ, আরিফ আহমেদ, কোকো স্মৃতি সংসদের সভাপতি শাহাদৎ হোসেন রাজু, গোলাম মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সেক্রেটারি মাজহারুল ইসলাম জনি, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদল সভাপতি জাহাগীর এম আলম, দেওয়ান কাওছার, আমিনুল ইসলাম চৌধরী, জাকারিয়া অপু, আশরাফ হোসেন, লং আইল্যান্ড বিএনপির সভাপতি মিয়া আলীম পাখি, জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক গোলাম হায়দার মুকুট, বিএনপি নেতা রুহুল আমিন নাছির, মোঃ কামাল হাওলাদার, মারুফ আহমেদ, এডভোকেট আরিফ রহমান চৌধুরী, সরোয়ার খান বাবু, রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, সালেহ আহমদ মানিক, সাদী মোহাম্মদ মিন্টু, রফিকুল ইসলাম ডালিম, জিয়াউল হক মিলন প্রমুখ।
‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারকল্পে আবারো এই প্রবাস থেকে ১/১১ এর চেতনায় দুর্বার আন্দোলন এবং মার্কিন কংগ্রেসে লবিংয়ের সংকল্প’ ব্যক্ত করেন র‌্যালির সভাপতি গিয়াস আহমেদ। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের অবদান অস্বীকারের অর্থ হবে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে অস্বীকারের সামিল। লাল-সবুজের পতাকা সমুন্নত রাখতে জিয়ার কথা বাংলাদেশিরা কখনো ভুলতে পারেন না। প্রধান অতিথি হেলাল খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। সরকার বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় ভীত বলেই সাজানো মামলায় তাকে দণ্ড দেয়া হয়েছে। তবে জনগণ এই দণ্ড মানছে না।

তবারক বিতরণের প্রাক্কালে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া-মোনাজাতে নেতৃত্ব দেন মাওলানা আতিকুর রহমান।
এদিকে, ৩০ মে সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের ব্যানারে জ্যাকসন হাইটসে ক্বাবাব কিং পার্টি হলে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা শীর্ষক অপর এক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রাব্বী মোহাম্মদ খোকন। বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি নেতা ও মূলধারার চেম্বার অব কমার্সের পরিচালনা পর্যদের অন্যতম সদস্য আকতার হোসেন বাদল।

এ অনুষ্ঠানের জন্যে গঠিত সাব-কমিটির প্রধান সমন্বয়কারি শাওন বাবলা, সমন্বয়কারি শামীম আহমেদ, মো. সাইফুল ইসলাম, এস এম শফি, কামাল হোসেন, জালাল আহমেদ ছাড়াও আলোচনায় অংশগ্রহণকারি নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, বিএনপি নেতা আশরাফউদ্দিন ঠাকুর, আহমেদ জীবন, মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, মাহবুব রহমান, সাইফুর রহমান রিপন, আরিফ মিয়া, আব্দুল কাদের রাজিব, ডা. মুক্তার আহমেদ, আক্তার হোসেন বিপ্লব, ফয়সাল আহমেদ, মুজিবর রহমান মুজিব প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভীর ক্ষোভের সাথে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আলোকপাতকালে অধ্যাপক দেলোয়ার বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার তথা বাংলাদেশকে নাজুক পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের জন্যে আন্দোলন নিয়ে আর সময়ক্ষেপণের অবকাশ থাকতে পারে না। সে আন্দোলন হতে হবে একটিমাত্র ইস্যুতে। আর তা হচ্ছে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ ব্যক্তিগণের সমন্বয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন।

প্রধান বক্তা আকতার হোসেন বাদল বলেন, বাকশালের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন করা হয়েছিল। তেমন একটি কঠিন পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আজ তেমন একটি সময়ের মুখোমুখী দাঁড় করানো হয়েছে গোটা জাতিকে। এখন সব ভেদাভেদ ভুলে দুর্বার আন্দোলনের বিকল্প নেই। এজন্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেন-দরবারেও বিএনপি পরিবারে ঐক্য রচনা হওয়া দরকার।

আলোচনা শেষে জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত এবং কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এর আগে ডাইভার্সিটি প্লাজায় তারা বিক্ষোভ করেন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়ে বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত জিয়াউর রহমানের বিষোদগার করার।