পদ্মা সেতুর উদ্বোধন : বর্ণিল সাজে হাতিরঝিল

উন্নয়ন ডেস্ক –

নুসরাত-আজহার দম্পতি ৯ মাসের মেয়েকে নিয়ে রাজধানীর আজিমপুর থেকে হাতিরঝিলে ঘুরতে এসেছেন। এসেই রীতিমতো অবাক। তাঁরা ভাবতে পারেননি আজ (গতকাল শনিবার) হাতিরঝিল দেখতে এত সুন্দর হবে। দিনভর গণমাধ্যমে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সংবাদ দেখেছেন।

হাতিরঝিলে এসে তাঁদের মনে হচ্ছে, তাঁরাও উদ্বোধনের আনন্দে অংশ নিতে পারলেন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বাতি-ব্যানার-ফেস্টুনে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে হাতিরঝিল। হাতিরঝিলের নতুন রূপ দেখে নুসরাত-আজহারের মতোই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে ঘুরতে আসা মানুষ। হাতিরঝিলের কারওয়ান বাজার, মধুবাগ, রামপুরা, এফডিসি অংশ ঘুরে এই ছবি পাওয়া যায়।

গতকাল দিনভর দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত ছিল হাতিরঝিল এলাকা। সন্ধ্যায় সেখানে অ্যাম্ফিথিয়েটারে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লেজার শো ও আতশবাজির মহড়ায় অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি হয়।

চক্রাকার বাসে করে তিনবার হাতিরঝিল ঘুরে এসে মেরুল স্টপেজে নেমে ঈসমাইল হোসাইন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। পরে দেখি পুরো হাতিরঝিল আলোকিত। তাই চক্রাকার বাসে করে তিনবার ঘুরলাম, যাতে সৌন্দর্যটা উপভোগ করতে পারি। ’

হাতিরঝিলের মনকাড়া সাজ দেখে সেখানে বেড়েছে হকারদের উপস্থিতি। চানাচুর বিক্রেতা স্বপন বলেন, ‘সারা দেশে আজকে অনেক আনন্দ। আজকে ঈদের দিনের মতো মানুষ রাস্তায় নেমেছে। এই জন্য দুপুরে বেশি করে চানাচুর নিয়ে চলে আসি। অন্য সময় লাল পুলিশ (নিরাপত্তারক্ষী) ঢুকতে দেয় না। তয় আজকে কিছু বলে নাই। ’

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটারে লেজার শো ও আতশবাজি বাড়তি মাত্রা যোগ করে উৎসবে। আতশবাজির মুহুর্মুহু শব্দে উপস্থিত দর্শনার্থীরা হাততালি দিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করছিল। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাচ-গান আর আলোচনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান এগোতে থাকে। মাঝেমধ্যে ভিডিওর মাধ্যমে দেখানো হয় পদ্মা সেতু উদ্বোধনের বিভিন্ন চিত্র, আগে-পরের উল্লেখযোগ্য নানা ঘটনা। এ সময় মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম প্রমুখ অ্যাম্ফিথিয়েটারে উপস্থিত ছিলেন।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যে অল্প সময়ে এই কাজটি (পদ্মা সেতু) শেষ করতে পেরেছি তার একমাত্র এবং প্রধান কারিগর হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা প্রত্যক্ষভাবে দেখেছি সব কিছু। এই সেতুর মাধ্যমে তিনি জাতিকে আত্মমর্যাদার অধিকারী হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করেছেন। ’

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু সততা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। আমাদের যদিও বিশ্বাস ছিল, কিন্তু অনেকে অবিশ্বাস করেছে, পদ্মা সেতু হবে না, এটা প্রধানমন্ত্রীর চাতুরতা মাত্র। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা প্রমাণ করলেন।