পাথরঘাটায় বিস্ফোরনের কারণ গ্যাস লাইনের লিকেজ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি বলছে, চট্টগ্রামের পাথরঘাটা ব্রিকফিল্ড রোডের বড়ুয়া ভবনে বিস্ফোরণ গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেই ঘটেছে।

সোমবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এজেডএম শরীফুল ইসলাম।

ম্যাজিট্রেট শরীফুল ইসলাম জানান, রোববার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে পাথরঘাটা বিস্ফোরণের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির মূল সরবরাহ লাইনে লিকেজ বা ছিদ্রের কারণে গ্যাস আবদ্ধ হয়ে যায় বড়ুয়া ভবনে। এই সময় ম্যাচের কাটিতে আগুন জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

তিনি জানান, ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে তদন্ত দল। যারা আহত হয়েছেন তাদের বক্তব্যও গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

সরেজমিন তদন্তে দেখা গেছে বড়ুয়া ভবনের নিচে যে গ্যাস রাইজারটি ছিল সেটি পুরনো এবং টেপ মোড়ানো। রাইজারের ওপরের আবরণও ছিল অনেক পাতলা। রাইজারটির ভেতরের অংশ ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। রাইজার থেকে গ্যাসের যে সার্ভিস লাইনটি ঘরের ভেতরে গেছে, সেটাতে মূলত লিকেজ ছিল। সেখান থেকেই গ্যাস বের হয়। গ্যাসের রাইজারটি আগে মুক্ত অবস্থায় ছিল।

এছাড়া বাড়ির মালিক নকশা অমান্য করে সীমানা দেওয়ালের সঙ্গে লাগোয়া দুই থেকে আড়াই ফুট উঁচু ছাদ দিয়ে এক বারান্দা তৈরি করেন। ঘরটিতে সামনে দুই কক্ষ এবং পেছনে আরেকটি কক্ষ ছিল। এরপর ২০ ফুট বাই ৫ ফুট এক শূন্যস্থান ছিল যেখানে রাইজারটি ছিল। বারান্দা তৈরির পর সেটি আবদ্ধ হয়ে পড়ে। রাইজারটি এবং সংলগ্ন গ্যাসের লাইনের সঙ্গে আলো-বাতাসের সংযোগ ছিল না। নির্গত গ্যাস বের হতে না পেরে সেখানে জমে যায়। ফলে আবদ্ধ ঘরে আগুনের সংস্পর্শে এসে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

তদন্ত প্রতিবেদনে, ভবন মালিকদের বিল্ডিং কোড মানতে বাধ্য করা, সিডিএর অনুমোদিত ভবন পরিদর্শন ও নকশা বহির্ভূত ভবন দ্রুত অপসারণ, ব্যানার-লিফলেটের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষের নিয়মিত গ্যাস লাইন ও রাইজার পরীক্ষা করা এবং গ্যাস সংক্রান্ত সমস্যার জন্য হটলাইন চালু করার সুপারিশ করা হয়।

উল্লেখ, গত ১৭ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা ব্রিক ফিল্ড রোডে বড়ুয়া ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মা-ছেলেসহ ৭ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়।