উন্নয়ন ডেস্ক –
বর্তমান যুগে গুনাহ করা খুব সহজ বিষয় হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তির অপব্যবহারে বেশির ভাগ মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছে গুনাহর অতল সাগরে। ফলে মানুষের জীবনে নেমে আসছে অন্ধকার, যা তাদের কৃতকর্মেরই ফল। মানুষকে কখনো কখনো তার পাপের কুপ্রভাব ভোগ করতে হয়। যদি সে তওবা না করে, তবে তা তাকে গ্রাস করে দিতে পারে। নিম্নে মানবজীবনে পাপের কয়েকটি কুপ্রভাব উল্লেখ করা হলো—
জলে-স্থলে বিপর্যয়
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যত বিপর্যয় সৃষ্টি হয়, তার সব কটি মানুষের পাপের ফসল। খরা, অনাবৃষ্টি, ভূমিকম্প, প্লাবন, মহামারি প্রভৃতির মূল কারণ হলো পাপ ও গুনাহ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের ফলে জলে-স্থলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, যাতে তিনি তাদেরকে তাদের কিছু কর্মের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৪১)
রিজিক ও জীবিকা সংকট
পাপের কুপ্রভাবে মানুষের রিজিকে সংকীর্ণতা নেমে আসে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই ভাগ্য পরিবর্তন করে না, নেক আমল ছাড়া আর কিছু আয়ু বাড়ায় না এবং কৃত পাপের কারণেই বান্দা জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২২)
লজ্জা-শরম হ্রাস
গুনাহ করতে থাকলে একটু একটু করে লজ্জা কমতে থাকে। তখন যেকোনো পাপাচারে যখন ইচ্ছা জড়িয়ে পড়া স্বভাবিক হয়ে যায়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমার থেকে লজ্জা চলে যাবে তখন তুমি যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১২০)
দরিদ্রতার সম্মুখীন
শয়তানের প্ররোচনায় যারা পাপে অভ্যস্ত হয়, দরিদ্রতা তাদের গ্রাস করে নেয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘শয়তান তোমাদের দরিদ্রতার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং অশ্লীলতার নির্দেশ দেয়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৬৮)
পরাজয়ের গ্লানি
এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা সংখ্যায় অধিক হবে; কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে সমুদ্রের ফেনার মতো। আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তরে তোমাদের ভয় দূর করে দেবেন এবং তোমাদের অন্তরে ‘ওয়াহন’ আপতিত করবেন। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল ‘ওয়াহন’ কী? তিনি বলেন, দুনিয়ার মোহ ও মৃত্যুকে অপছন্দ করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪২৯৯)
সবার কাছে নিন্দিত
আল্লাহ পাপী ব্যক্তির ওপর মানুষের ঘৃণা সৃষ্টি করে দেন। ফলে সবাই তাকে অপছন্দ করে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যদি কোনো লোকের ওপর রাগ করেন তখন জিবরাঈল (আ.)-কে ডাক দেন এবং বলেন, আমি অমুক বান্দার ওপর রাগ করেছি, তুমিও তার প্রতি নারাজ হও। তিনি (সা.) বলেন, তখন জিবরাঈল (আ.) তার ওপর রাগান্বিত হন। তারপর তিনি আকাশবাসীদের ডাক দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অমুকের ওপর রাগান্বিত। কাজেই আপনারাও তার ওপর ক্রোধান্বিত হোন। তিনি বলেন, তখন লোকেরা তার সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করে। তারপর তার জন্য পৃথিবীতে শত্রু বানিয়ে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৩৭)
আল্লাহ আমাদের গুনাহমুক্ত জীবনযাপনের তাওফিক দান করুন।