উন্নয়ন ডেস্ক –
ভোজ্য তেল বলতে শুধু সয়াবিন তেল আর পাম তেল নয়। সরিষা তেল, সূর্যমুখী তেল, রাইস ব্র্যান তেলসহ আরো বিভিন্ন রকমের ভোজ্য তেল রয়েছে। রাইস ব্র্যান তেল স্বাস্থ্যের জন্য সয়াবিন ও পাম তেলের চেয়ে অনেক ভালো। আমাদের দেশে রাইস ব্র্যান তেলের সম্ভাবনাও প্রচুর।
একসময় আমাদের দেশের প্রধান ভোজ্য তেল ছিল সরিষার তেল। এখনো দেশে প্রচুর সরিষা উৎপন্ন হয়। তাই আমাদের ভোজ্য তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
এখন সয়াবিন ও পাম তেলের বাড়তি মূল্যে আমরা যদি রাইস ব্র্যান তেল ও সরিষার তেল উৎপাদন বাড়াতে পারি, তাহলে বিদেশনির্ভরতা কিছুটা হলেও কমবে। সরকারের প্রচেষ্টা হওয়া উচিত ভোজ্য তেলের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনা। এটি যদিও দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার, তার পরও আমাদের ওই দিকেই যেতে হবে। আমদানিনির্ভরতা কমাতে পারলে আমাদের বারবার এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হবে না।
সরকার ভোজ্য তেলের দাম সহনীয় রাখতে ভ্যাট কমানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতার কারণে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি ছাড়া বিকল্প ছিল না। তবে সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম যখন কমে, তখন যেন এই বাড়তি দাম না থাকে। তখন দ্রুততার সঙ্গে যেন দাম কমানো হয়। আমরা অতীতে দেখে আসছি একবার দাম বাড়লে পরে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশের বাজারে সহজে আর দাম কমে না। সরকারকে নিবিড়ভাবে আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
এখন যে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি, সেটি বাস্তবতা। দাম বাড়লেও বাজারে পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে, বর্ধিত মূল্যে বাজারে যদি পণ্য পাওয়া যায়, তাতেও ভোক্তাদের এক ধরনের স্বস্তি। তবে আর্থিকভাবে এই মূল্য বৃদ্ধিতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত। ভোজ্য তেলের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের কষ্ট হবে। কারণ ভোক্তাদের তো আয়-রোজগার বাড়েনি, বরং কমেছে। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে, তাই কোনো ব্যবসায়ী লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবেন না। সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার কারণে কিছুদিন ধরে বাজারে তেলের সংকট।
গোলাম রহমান : সভাপতি, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।