রংপুরে নতুন ঝাঁকি নেশা

রংপুর প্রতিনিধি: এক ছাত্রী অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে তাদের কাছ থেকে নতুন নেশাদ্রব্যের চাঞ্চলকর তথ্য পেয়েছে রংপুর মহানগরীর পুলিশ।

গ্রেপ্তার যুবকরা ‘টাইগার গ্যাং’ নামে এলাকায় পরিচিত। এই গ্যাংয়ের ১৫-২০ জন সদস্য ‘ঝাঁকি নেশা’ মাদকে আসক্ত।

তাদের নিজেদের তৈরি ‘ঝাঁকি নেশা’ এক প্রকার পানীয়। কাঁশির সিরাপ অটোসিল অথবা পালমোরিনের বোতলে ইজিএম, সিভিট, সিজোপিন, জলিয়াম ০.৫ ওষুধ গুড়ো করে মিশিয়ে ভালোভাবে ‘ঝাঁকি’ দিয়ে এই নেশাদ্রব্য তৈরি করা হয়। এটাকে তারা ‘ঝাঁকি নেশা’ বলে।

এটা সহজলভ্য হওয়ায় ওই গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। সদস্যদের বেশির ভাগ স্কুল, কলেজে পড়ুয়া। আবার কয়েকজন অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসের চালক। অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে এরা জড়িত।

হারাগাছে ছাত্রী অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত টাইগার গ্যাংয়ের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। অপহরণ মামলা তদন্তকালে পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ‘ঝাঁকি নেশার’ তথ্য উদঘাটন করেছে।

শনিবার দুপুরে হারাগাছ থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ সব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার বধূ কমলা এলাকা থেকে গত ২৬ অক্টোবর এক ছাত্রীকে মাইক্রোবাসে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মামলা করা হয়। ওই দিন মামলার তদন্ত কর্মকতা এজাহারনামীয় চার আসামি- হারাগাছ থানার সারাই নিউ কাজীপাড়া (কসাইটারী) এলাকার মো. শুকুর আলী (১৯), মো. আলম হোসেন (২২), মো. মনারুল ইসলাম (২৩) ও মো. নাসিম মাহমুদ নাহিদকে (১৯) গ্রেপ্তার করে এবং ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।

এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্যাং লিডার আশিকুর রহমান চৌধুরীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে বেরিয়ে আসে ‘ঝাঁকি নেশার’ তথ্য।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (মাহিগঞ্জ জোন) মো. ফারুক আহমেদ জানান, মামলার এজাহারনামীয় গ্রেপ্তারকৃত ও পলাতক আসামিরা ‘টাইগার গ্যাং’র সদস্য। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্যাং লিডার মো. আশিকুর রহমান চৌধুরী ও মো. মাহিন ইসলাম ওরফে তোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, মো. আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল রয়েছে। এই দলের সদস্যদের বয়স ১৮ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। এদের কয়েকজন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এরা আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে হারাগাছ থানার সারাই কসাইটারী, ডাঙ্গারপাড়া, মুন্সিপাড়া, সাহেবগঞ্জ, দালালহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে এবং মারধরের ভয় দেখিয়ে সুবিধা আদায় করে। সুযোগ পেলে অপহরণ করে।

কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের রাজনৈতিক পরিচয় কী জানাতে চাইলে হারাগাছ থানার ওসি নাজমুল কাদের জানান, ওদের রাজনৈতিক পরিচয় তার জানা নেই। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন- গ্যাংয়ের প্রধান আশিকুর রহমান চৌধুরী জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্র সমাজের সঙ্গে জড়িত।