শেখ হাসিনা গণমাধ্যমবান্ধব প্রধানমন্ত্রী, সংবাদপত্রের সংকট উত্তরণে কাজ করছে সরকার: বিএসপি’র সাথে বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী

উন্নয়ন বার্তা প্রতিবেদন :
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সরকার গণমাধ্যমবান্ধব সরকার। শেখ হাসিনা গণমাধ্যমবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। সে কারণেই বাংলাদেশে গত ১৪ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। ১২ ফেব্রুয়ারি রোববার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ-এর নেতৃবৃন্দের সাথে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাড়ে চারশত থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১২শত ৬০টি দৈনিক পত্রিকা হয়েছে, অনলাইন গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে, একইসাথে টেলিভিশনের সংখ্যা ১০টি থেকে এখন ৩৬টি সম্প্রচারে আছে। এফএম এবং কমিউনিটি রেডিওগুলোও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে লাইসেন্স পেয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সংংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার বিকাশে বর্তমান সরকার অত্যন্ত উদার। অবাধ তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে দেশে চলমান পরিকল্পিত উন্নয়ন ধারাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে দেশের সংবাদপত্র যে ভূমিকা রাখছে তা উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন অগ্রগতি এবং প্রগতির ধারাকে লালন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপির) অন্তভুক্ত সংবাদপত্রগুলো দায়িত্ব পালন করে আসছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া ও ধারাবাহিকতাকে সুরক্ষার জন্য আমাদের সরকার কাজ করছে। যার ফলে আমাদের দেশের সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এখন বিকাশমান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের অন্তর্ভুক্ত পত্রিকাগুলো প্রগতির অগ্রযাত্রায় যে ভূমিকা রাখছে তা প্রশংসনীয়। সভায় বিএসপি নেতৃবৃন্দ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ক্রোড়পত্রগুলোর বকেয়া বিল পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়া, জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় দৈনিকে নীতিমালা অনুযায়ী ক্রোড়পত্র প্রদান, মিডিয়া তালিকাভুক্ত সংবাদপত্রসমূহে সুষ্ঠু বিজ্ঞাপন বন্টন ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন কমিটিতে বিএসপির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করাসহ ১৫টি দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেন। মন্ত্রী দাবি-দাওয়াগুলো পর্যালোচনার আশ্বাস দেন।

বিএসপি নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা শেষে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদীয় দলনেতা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার দল একজন অসাধারণ ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছে’।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো: সাহাবুদ্দিন মাঠের রাজনীতি করেছেন। রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছেন। যিনি মুক্তিযোদ্ধা, যার মধ্যে ভদ্রতা, নম্রতা একইসাথে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সব কিছুরই সমন্বয় আছে। আর এ বিষয়ে বিএনপির অনাগ্রহের কারণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের অশ্রদ্ধা।’
রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রস্তাবিত ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সমর্থিত মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র এ দিন নির্বাচন কমিশনে দাখিলের পর দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি) নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মিলিত হন তথ্যমন্ত্রী। সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, বিএসপি সভাপতি মো. মোজাফফর হোসেন পল্টু ও সাধারণ সম্পাদক এম জি কিবরিয়া চৌধুরী সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপি নেতাদের রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই- এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির তো দেশটা নিয়েই কোন আগ্রহ নেই। তাদের সমস্ত আগ্রহের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে তারেক রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া। দেখুন কিভাবে শাস্তিপ্রাপ্ত আসামী তারেক রহমানকে তারা তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানিয়েছে এবং বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখে! আমরাও চাই তিনি ফিরে আসুক, শাস্তির মুখোমুখি হোক, বিচার কাজের মুখোমুখি হোক। আর বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য -এ নিয়ে তাদের সমস্ত আগ্রহ। জনগণ বা দেশ নিয়ে তো তাদের কোনো আগ্রহ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আসলে গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি অশ্রদ্ধাশীল বিধায় বিএনপি এ ধরনের কথা বলতে পারে যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। এর অর্থ হচ্ছে গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের কোন আগ্রহ নেই।

বিএনপির পদযাত্রায় নানা সংঘর্ষ নিয়ে প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তো সারাদেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে দেওয়া এবং বিশৃঙ্খলা তৈরির অসৎ উদ্দেশ্যেই ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রার কর্মসূচি নিয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহাড়ায় ছিলো, শান্তি সমাবেশ করেছে, সে জন্য তারা সারাদেশে যেভাবে বিশৃঙ্খলা করতে চেয়েছিল তা পারেনি। এরপরও বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র উঁচিয়ে তাদের অগ্নিসন্ত্রাসীরা সেই সব সমাবেশে যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ আর তাদেরকে ২০১৩-১৪-১৫ সালের মতো সেই পরিস্থিতি তৈরির সুযোগ দেবে না।

বিএসপি’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক রফিক উল্লাহ সিকদার, মো. আতিকুর রহমান চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুর বারী মঞ্জু, চৌধুরী আতাউর রহমান, এবিএম সেলিম আহমেদ, কাজী আনোয়ার আমাল, ফরিদ আহাম্মদ বাঙ্গলী, কোষাধ্যক্ষ মফিজুর রহমান খান (বাবু), সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন, দপ্তর ও কল্যাণ সম্পাদক মোরশেদ মজুমদার এবং সদস্যদের মধ্যে এম এ জলিল, অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, মোহাম্মদ আরেফিন, এডভোকেট মনোয়ার হোসেন, রুমাজ্জল হোসেন রুবেল, রবিউল ইসলাম রুবেল, মো: তাজুল ইসলাম, এম এ এস ইমন, নুরুন নাহার রীতা, অশোক ধর, এড. আমিনুল হক আকবর, মাছুদ উর রহমান নিলু প্রমূখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।