সেনা প্রধানের মিয়ানমার সফর সমঝোতার আরেকটি পথ খুলবে – পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতেবদক: বাংলাদেশ সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের আসন্ন মিয়ানমার সফর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ঢাকা ও নাইপিদোর মধ্যে ‘সমঝোতার আরেকটি পথ’ খুলবে। একথা বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।

বুধবার রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা পদ্মায় প্রেস ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি সেনা প্রধানের সফরটি থেকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একটি ভাল ফলাফল বেরিয়ে আসবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন স্পেন সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন।

ইউনাইটেড ন্যাশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) এর ২৫তম বার্ষিক কনফারেন্স অব পার্টিস (সিওপি)-এ যোগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আগামী ১ ডিসেম্বর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে। সম্মেলনটি মাদ্রিদে ২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রাখছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা নাইপিদোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটটি সমাধান করছে ইচ্ছুক।

তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটটি মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধানও তাদের কাছেই আছে।’

মোমেন আরো বলেন, মিয়ানমারে সামরিক কর্তৃপক্ষের এই ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই, বাংলাদেশ সেনা প্রধানের মিয়ানমার সফরটি রাখাইন রাজ্য থেকে

জোরপূর্বক উচ্ছেদকৃত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার একটি ইতিবাচক সম্ভাবনা হতে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের ৬৮০০ একর বনভূমিতে রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী শিবির নির্মাণ করা হয়েছে। এটা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় গোটা প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটা বিপর্যয়ের মত। ওই স্থান হাতির চারণভূমি ছিল।’

স্পেনে আসন্ন সিওপি-২৫-এ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা জন¯্রােতের কারণে কক্সবাজারের পরিবেশগত ঝুঁকির দিকটি তুলে ধরবে।

১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর নির্মম দমনপীড়ন শুরু করলে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে এদের অধিকাংশ প্রাণ বাঁচাতে এদেশে আশ্রয় নেয়।

জাতিসংঘ ওই ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ’ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করে।

গত দুই বছরে একজন রোহিঙ্গাও প্রত্যাবাসিত হয়নি। কারণ, মিয়ানমার তাদের রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাবার জন্য আস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে।

ঢাকা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করছে মিয়ানমারের এমন মিথ্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘এটি একটি সবৈব মিথ্যা কথা, জঘন্য প্রপাগা-া। আমরা সব সময়ই প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত। তারা যখনই চাইবে আমরা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেব।’