উন্নয়ন ডেস্ক –
খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন বাইপাস সংযোগ সড়কের ময়ূরী সেতু পর্যন্ত পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। এ জন্য ২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পে ৮০০ মিটার সড়ক পুনর্নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বাকি টাকা জমি অধিগ্রহণসহ অন্য কাজে ব্যয় হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ হলে এটিই হবে খুলনার সবচেয়ে ব্যয়বহুল সড়ক।
৯ বছর আগে এ সড়কটি নির্মাণ করেছিল কেডিএ। তখন ২ দশমিক ১৬ কিলোমিটারের ওই সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ২০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সড়কের মাঝে অসংখ্য গর্ত তৈরি হওয়ায় দুই বছরের মধ্যে সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়ক সংস্কার নিয়ে দীর্ঘদিন রেষারেষি চলেছে কেডিএ ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মধ্যে। কোনো সংস্থা সংস্কার না করায় সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এটিই ছিল খুলনার সবচেয়ে বেশি ভাঙাচোরা সড়ক।
কেডিএ থেকে জানা গেছে, গত মার্চ মাসে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল আধাসরকারিপত্র (ডিও) দিয়ে সড়কটি মেরামতে প্রকল্প তৈরির জন্য অনুরোধ জানান। সেই নির্দেশনা পেয়েই সড়ক মেরামত প্রকল্প তৈরি করেছে কেডিএ। একই সঙ্গে বালু ও ইট বিছিয়ে কিছুটা সড়কটি চলাচল উপযোগী করা হয়।
কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রকল্প) মোর্তুজা আল মামুন জানান, এম এ বারী সড়ক থেকে ময়ূরী সেতু পর্যন্ত সিটি উন্নয়ন নামের প্রকল্পটি গত মার্চে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় সড়কটি চার লেন করা হবে। সাড়ে ২৩ ফুট প্রশস্ততার দুটি করে চার লেন, ৩ ফুট ডিভাইডার এবং দুই পাশে ৫ ফুট প্রশস্ততার ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। বর্তমান উচ্চতার চেয়ে প্রায় দুই ফুট উঁচু হবে সড়ক। দুই পাশে ড্রেনের সংযোগ ময়ূর নদীতে গিয়ে মিশবে। এ জন্য নদীর পাড়ে ২ দশমিক ৯ শতক জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া ডিভাইডারে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে।
এত বিপুল ব্যয়ের কারণ প্রসঙ্গে মোর্তুজা বলেন, বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সড়ক হওয়ায় প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি সড়কটি দিয়ে চলাচল করে। এ জন্য আঞ্চলিক মহাসড়কের মানে সড়কটি নির্মাণ হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরামর্শ নিয়ে প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান সমকালকে বলেন, ২০ কোটি টাকার সড়ক দুই বছরও টেকেনি। এ কারণে এই সড়ক নিয়ে মানুষের ক্ষোভ ও কষ্টের শেষ ছিল না। পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ অবশ্যই ভালো, কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ ব্যয়ের আগে আরও ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা উচিত।
তিনি বলেন, যেভাবে মজবুত সড়ক তৈরির কথা কেডিএ বলছে, সে রকম সড়ক তৈরির অভিজ্ঞতা কেডিএ কর্মকর্তাদের নেই। এ জন্য কেডিএকে না দিয়ে সড়কটি অন্য কোনো সংস্থাকে দিয়ে সংস্কার করা উচিত।