চীনে আবারো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২১ মাসের মধ্যে একদিনে করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ স্থানীয় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনার নতুন হটস্পট হয়ে ওঠা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিয়ান শহরে সংক্রমণ দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। তবে চীনে এখনো কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন শনাক্ত হয়নি।
আজ রোববার দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এক কোটি ৩০ লাখ মানুষের শহর জিয়ানে স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনায় শনিবার ১৫৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন; যা আগের দিনের তুলনায় ৭৫ জন বেশি। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরটিতে চার দিনের লকডাউন জারি করা হয়েছে।
গার্ডিয়ানের খবরে জানানো হয়েছে, জিয়ান থেকে এখন পর্যন্ত ৫ শহরে কোভিড ছড়িয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে চীনের রাজধানী বেইজিংও। চীন এখন সংক্রমণ থামানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই বেইজিং-এ অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১৫৮ জনের; যা গত বছরের শুরুর দিকে ছড়িয়ে পড়া প্রাদুর্ভাবের লাগাম টানার পর একদিনে সর্বোচ্চ।
গত ৯ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জিয়ানে উপসর্গজনিত স্থানীয় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে অন্তত ৪৮৫ জনের। দেশটিতে করোনা প্রাদুর্ভাবের নতুন হটস্পট হয়ে ওঠা এই শহরে বেইজিংয়ের নীতির সঙ্গে মিল রেখে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
আজ রোববার জিয়ানের সরকারি কর্মকর্তা হি ওয়েনকুয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিন দফায় গণহারে করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে সংক্রমণ শনাক্ত করেছে জিয়ান। সংক্রমণের এই উচ্চ হার আগামী কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিদেশ ফেরতদের সংক্রমণসহ চীনের মূল ভূখণ্ডে শনিবার ২০৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; যা তার আগের দিনের তুলনায় ১৪০ জন বেশি। তবে দেশটিতে এই ভাইরাসে নতুন করে কেউ মারা যায়নি।
সবকারের দেওয়া তথ্যমতে, করোনাভাইরাস মহামারিতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৩৬ জন মারা গেছেন। এছাড়া শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ১ হাজার ৭৭ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে। তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় একই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
সূত্র : রয়টার্স