উন্নয়ন বার্তা ডেস্ক:
কভিডে মানুষের জীবন-জীবিকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মহামারী প্রতিরোধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জারি করা হয়েছে লকডাউন। তবে এর মধ্যেও দেশের প্রপার্টি মার্কেট বা আবাসন খাতে জমজমাট ভাব বজায় রয়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সাধারণ মানুষের কাছে টাকা অপ্রতুল। কভিডের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাঝারি ব্যবসায়ীরাও। এর পরও চাহিদা বাড়ছে আবাসন খাতের। চাহিদার এ ঊর্ধ্বমুখিতায় চালকের আসনে রয়েছেন প্রধানত সরকারি চাকরিজীবীরাই। সরকারের দেয়া ঋণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ফ্ল্যাট ও জমি কিনছেন তারা।
সরকারি চাকুরেদের ৭০-৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। আবাসন খাতের কোম্পানিগুলোর দাবি, জমি ও ফ্ল্যাটের ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা বড় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া গত বছর ঘোষিত করবহির্ভূত আয় বিনিয়োগের অনুমোদনও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এ সুযোগ ঘোষণার পর আবাসন খাতে করমুক্ত বিনিয়োগ এসেছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়া গৃহঋণে ৯ শতাংশ সুদ, জমি হস্তান্তরে করহার ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা এবং স্ট্যাম্প ডিউটি ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে দেড় শতাংশ করার মতো পদক্ষেপগুলোও খাতটির সম্প্রসারণে ভূমিকা রেখেছে।
শীর্ষ আবাসন প্রতিষ্ঠান শেলটেক ও আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ২০১০ সালে ফ্ল্যাটের দাম বর্গফুটপ্রতি ৭ হাজার টাকা ছিল। চাহিদার নিম্নমুখিতায় কভিডের আগেও সেখানে একই দামে ফ্ল্যাট কেনাবেচা হয়। তবে বর্তমানে ওই এলাকায় প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম ৯ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে।
শুধু মোহাম্মদপুর নয়, রাজধানীর সব এলাকায়ই কম-বেশি ফ্ল্যাটের দাম বাড়তে শুরু করেছে। কলাবাগান এলাকায় প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম ২০১০ সালে ছিল ৭ হাজার টাকা। প্রাক-কভিড কালেও এ দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু বর্তমানে প্রতি বর্গফুটের দাম ৯ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত বনানীতে প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম ২০১০ সালে ছিল ১৩ হাজার টাকা। কভিডের আগে তা কমে ১১ হাজার টাকায় নেমে আসে। বর্তমানে দাম বেড়ে প্রতি বর্গফুট ১৩ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। একইভাবে কভিড-পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে ধানমন্ডি, গুলশান, বারিধারা, লালমাটিয়া, মিরপুর, উত্তরা, শ্যামলী, কলাবাগান ও শান্তিনগর এলাকায়।
রাজধানীর এই ১১টি এলাকার গড় দাম বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৫ সালে ফ্ল্যাটের গড় মূল্য ছিল বর্গফুটপ্রতি ৩ হাজার ৬৪ টাকা। ২০১০ সালে এই দাম বেড়ে হয় ৯ হাজার ৫০০ টাকা। কভিডের আগে তা কমে গিয়ে ৯ হাজার ৯১ টাকায় ঠেকে। ২০২০ সালের শেষ দিকে সেই দাম আবার বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি বর্গফুট ১১ হাজার ৪৫৫ টাকায়।