ইনস্টাগ্রামের সঙ্গে জুড়ে বসছে মেসেঞ্জার

উন্নয়ন ডেস্ক –

মেসেঞ্জার চ্যাট ও ইনস্টাগ্রাম ডাইরেক্টকে একীভূত করার কাজ শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক। এতে ব্যবহারকারীরা একই জায়গা থেকে উভয় ইনবক্সে অ্যাকসেস করতে পারবেন। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য ভার্জের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইনস্টাগ্রাম অ্যাপে সম্প্রতি একটি সফটওয়্যার হালনাগাদ এসেছে।

যাতে বার্তা দেখানো হচ্ছে, ইনস্টাগ্রামে বার্তা আদান–প্রদানের একটি নতুন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ফিচার হিসেবে চ্যাটের রঙিন দৃশ্য, আরও ইমোজি প্রতিক্রিয়া, সোয়াইপ-টু-রিপ্লে এবং সবচেয়ে বড় ফিচার ফেসবুক ব্যবহারকারী বন্ধুদের সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম থেকেই আলাপ চালানো।

ইনস্টাগ্রাম অ্যাপটি হালনাগাদ হয়ে গেলেই এর ওপরের ডান দিকে থাকা ডাইরেক্ট মেসেজ আইকনটির জায়গায় ফেসবুক মেসেঞ্জারের লোগো চলে আসবে। একীভূত করার পুরো প্রক্রিয়া অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস উভয় প্ল্যাটফর্মে চালু হবে।

ইনস্টাগ্রাম হালনাগাদ করার আগে মনে রাখতে হবে, এটি ইনস্টাগ্রাম ডাইরেক্ট মেসেজ ইনবক্সের পুরো চেহারা বদলে দেবে। এটি অনেকটাই মেসেঞ্জারের মতোই দেখাবে। এমনটি এতে মেসেঞ্জার আইকনটি দেখাবে। তবে যাঁরা ইনস্টাগ্রাম হালনাগাদ করতে চান না, তাঁদের ওপর জোর করছে না ফেসবুক। এটা পুরোপুরি ঐচ্ছিক। যাঁরা দুটি ইনবক্স পৃথক রাখতে চান, তারা ‘নট নাউ’ সিলেক্ট করে দিতে পারবেন। যাঁরা দুটি ইনবক্স এক করে ফেলতে চান, তাঁরা ‘আপডেট’ করে দিতে পারেন।

অবশ্য কেউ যদি ইনস্টাগ্রাম আপডেট না করেন, তবু তিনি ইনস্টাগ্রামে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মেসেজের অনুরোধ পাবেন। অর্থাৎ এ মুহূর্তে কেবল ফেসবুক থেকে কেউ বার্তা পাঠালে তবেই তার সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম থেকে কথাবার্তা চালানো যাবে। ভবিষ্যতে এ নিয়ম বদলে যেতে পারে। যাঁরা ফেসবুকে সক্রিয় নন, কিন্তু ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন, এ সুবিধা তাঁদের কাজে লাগবে। তাঁরা ইনস্টাগ্রাম থেকে ফেসবুকের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীরা প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তন না করেই আলোচনা চালিয়ে যেতে পারবেন।

মেসেঞ্জারসহ বার্তা আদান–প্রদানের সেবাগুলোকে একীভূত করতে গত বছর থেকে কাজ করছে ফেসবুক। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের চ্যাটিং সেবা এক করার পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদি বলে মন্তব্য করেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুকের চতুর্থ প্রান্তিকের আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাকারবার্গ বলেন, ‘একত্রীকরণ পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এখনো অনেক কিছু ঠিক করতে হবে। এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হবে, যা আমার ধারণা, ২০২০ সাল বা তার পরে সম্ভব হবে।’

ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা সেরা মেসেজিং অভিজ্ঞতা তৈরি করতে চাই। মানুষ দ্রুত, সহজ, নির্ভরযোগ্য ও ব্যক্তিগত যোগাযোগসুবিধা চায়। আমরা আমাদের মেসেজিং আরও বেশি এনক্রিপটেড করতে যাচ্ছি, যাতে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে নেটওয়ার্কজুড়ে সহজে যোগাযোগ রাখা যায়।’

ইনস্টাগ্রামের সঙ্গে মেসেঞ্জার জুড়ে দেওয়া ছাড়াও ফেসবুক সম্প্রতি তাদের অ্যাপে টিকটক ভিডিও ফিচার যুক্ত করার পরীক্ষা চালাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ম্যাট নাভারা বলেন, ফেসবুকে যে ভিডিও শেয়ার করার সুবিধা যুক্ত হচ্ছে, তা টিকটকের মতোই। ভিডিও দেখতে টিকটকের মতো স্ক্রল করতে হবে। ফেসবুক এখনো তাদের পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে তাদের মালিকানায় থাকা ইনস্টাগ্রামে রিলস নামে ছোট ভিডিও শেয়ার করার ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এবার এ ধরনের ফিচারটি মূল ফেসবুক অ্যাপেও যুক্ত হতে পারে। এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এর ইন্টারফেস ও ফাংশনগুলো অনেকটাই টিকটকের মতো।