খাগড়াছড়িতে কয়লার সন্ধান পাওয়ার দাবি স্থানীয়দের

উন্নয়ন বার্তা ডেস্ক:

খাগড়াছড়ির দুর্গম পাহাড়ি জনপদে কয়লাসদৃশ বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন স্থানীয়রা। তারা রান্নার কাজে এটি ব্যবহার করছেন। পাহাড়ের দুর্গম জনপদে সম্ভাব্য কয়লা পাওয়ার গুঞ্জন সত্যি হলে তা হয়ে উঠতে পারে জাতীয় অর্থনীতির বিশাল সম্ভাবনার অন্যতম ক্ষেত্র। কয়লাসদৃশ এ বস্তু দেখতে প্রতিদিন শতশত উৎসুক জনতা ভিড় করছেন।

পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের পাঁচ কিলোমিটারেরও বেশি সরু পাহাড়ি পথ আর ঝিরি মাড়িয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম এলাকা বামা গোমতী। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে আমতলী ইউনিয়ন সদর থেকে মোটরসাইকেল ও ঘণ্টাখানেক পায়ে হেঁটে পাহাড়ি উঁচুনিচু পথ পেরিয়ে দুর্গম বামা গোমতী পৌঁছানো যায়। সেখানেই পাওয়া যাচ্ছে কয়লাসদৃশ এ বস্তু।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগে দুর্গম পাহাড়ে কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে মাটি খনন করতে গিয়ে এ বস্তুর সন্ধান পান স্থানীয় কৃষকরা। এগুলো সংগ্রহ করে তারা রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন।

স্থানীয় কৃষক মো. হানিফ বলেন, প্রায় বছরখানেক আগে আদা-হলুদ রোপণের জন্য মাটি খননের পর কয়লাসদৃশ বস্তুু দেখতে পাই। পরে এগুলো সংগ্রহ করে আগুনে পুড়িয়ে কয়লা বলে নিশ্চিত হই। পরে বিষয়টি অন্যদের জানালে তারাও আগ্রহী হয়ে কয়লা সংগ্রহ করে পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছেন।

শফিকুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, এগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে। আমাদের অনেকেই রান্নার কাজে ব্যবহার করছেন।

কয়লাসদৃশ এ বস্তু রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, বামা গোমতীতে কয়লার খনি আবিষ্কৃত হলে তাদের ভাগ্য বদলে যাবে।

ইউপি সদস্য ইউনুছ মিয়া বলেন, দুর্গম পাহাড়ে কয়লা পাওয়ার বিষয়টি সঠিক হলে তা পাহাড়ের বড় পাওয়া হবে।

পাহাড়ের পাদদেশে কয়লা পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম।

কয়লা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গণি বলেন, বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হলে দেশে বিদ্যমান কয়লার ঘাটতি পূরণ হবে। জ্বালানি সংকট দূরীভূত হবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, মাটিরাঙ্গার বামা গোমতী এলাকায় কয়লাসদৃশ বস্তু পাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। স্থানীয়রা সংগ্রহ করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানোর জন্য বলা হবে।

তিনি বলেন, রিপোর্ট পাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। বামা গোমতীতে কয়লা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে সারাদেশে জ্বালানি খাতে বিপ্লব ঘটতে পারে।