চাপ বাড়লে সংক্ষিপ্ত কাউন্সিল করবে বিএনপি

উন্নয়ন ডেস্ক –

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর কাউন্সিল করার কথা। প্রায় দেড় বছর মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও করোনা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে কাউন্সিল করতে পারছে না বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে অবস্থান করছেন। এমন পরিস্থিতিতে কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করারও কেউ নেই। শীর্ষ কোনো নেতার সভাপতিত্বে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হলেও সেখানে শৃঙ্খলা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর পর পর কাউন্সিল করার যে বিধান রয়েছে তা লঙ্ঘন হচ্ছে। এর মধ্যেই তারা দুই দফা সময় চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কমিটির মেয়াদ তিন বছর। তবে দলটির গঠনতন্ত্রে এও বলা আছে, কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষে কোনো কারণে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত না হলে বর্তমান কমিটি দায়িত্ব পালন করতে পারবে, যা এখন চলছে।

জানা গেছে, খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় জেলে যান। চলতি বছরের ২৫ মার্চ তিনি মুক্তি পান। এর পর থেকে করোনাসহ নানা পরিস্থিতির কারণে তিনি গুলশানের নিজ বাসভবনেই অবস্থান করছেন। তারেক রহমানও সহসাই দেশে ফিরতে পারছেন না। যদিও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিদেশে বসেই সংগঠন গোছানোর কাজ শুরু করেছেন তারেক রহমান। এরই মধ্যে ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিসহ বিভিন্ন জেলা ও পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি নিয়ে বসে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করেছেন। আবার অনেক জায়গায় স্থানীয়দের বিরোধের কারণে কমিটি গঠন আটকে আছে।

জানা গেছে, সারা দেশে দলের ৮১টি সাংগঠনিক জেলার বেশির ভাগেরই কমিটি পুনর্গঠন সম্ভব হয়নি। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শুরুর পর করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগে ১৯টি জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর ৯টি সাংগঠনিক জেলার আংশিক থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়েছে।

এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন বা দলের সর্বস্তর থেকে যদি চাপ বাড়ে সে ক্ষেত্রে বিকল্প চিন্তাও করে রাখছেন দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা। একটি সূত্র জানায়, এ ক্ষেত্রে একেবারেই সংক্ষিপ্ত ইনডোর একটি কাউন্সিলের আয়োজন করা হবে। ভার্চুয়ালি দলের চেয়ারপারসন গুলশানের বাসভবন থেকে দলের কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করবেন। সেই কাউন্সিলে ১৫১ সদস্যের সংক্ষিপ্ত একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে।

গত ২২ জুন দলের এক কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, তাঁরা দলের জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মিডিয়াকে বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের সাংগঠনিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এসব বিষয় শেষে দলের কাউন্সিলের প্রসঙ্গটিও আসবে। সে সময় আলোচনা শেষে আমরা একটা সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’

দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠন কর্মকাণ্ড আটকে আছে। ফলে আমরা একটু পিছিয়ে পড়েছি। যদিও ভার্চুয়ালি পুনর্গঠনের কাজ আমরা যতটুকু পারছি এগিয়ে রাখছি। দলের হাইকমান্ড চাইলে স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিতে পারব।’

যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আরপিও অনুযায়ী একটা বিধি-বিধান রয়েছে। কিন্তু সবারই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা কেন কাউন্সিল করতে পারছি না তা নির্বাচন কমিশনের কাছে বলেছি। চলতি বছরে যদি কোনো কারণে করতে না পারি তাহলেও নির্বাচন কমিশনকে যৌক্তিক কারণ জানিয়ে বার্তা দেওয়া হবে।