ফিলিস্তিনের গাজায় রাতভর ইসরায়েলের হামলা

উন্নয়ন বার্তা ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের গাজায় স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে ও আজ সোমবারও বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের শহরগুলোতে হামাসও রকেট হামলা চালিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব হামলায় হতাহত হওয়ার কোনো খবর জানা যায়নি। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সংঘাত কমার কোনো লক্ষণ নেই।

গাজার রাস্তা, ভবন, হামাসের প্রশিক্ষণ শিবির ও ঘরবাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের বেশির ভাগ জায়গায় রাতভর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে এসব হামলা হয়েছে। তাদের দাবি, গতকাল রোববার গভীর রাতে বিরসেবা ও আশকেলন শহরে গাজা থেকে রকেট হামলা চালানো হয়। এরপরই ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, গতকাল ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৪২ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০টি শিশু। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন টুইটে জানান, অবিলম্বে সহিংসতা নিরসন করতে হবে। সহিংসতা নিরসনে সব পক্ষের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। ইসরায়েল, গাজা এবং দখলকৃত পশ্চিম তীরে চলমান সহিংসতা নিয়ে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে তিনি এই টুইট করেন।

এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজা, পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণহানি বেড়ে প্রায় ২০০ জন হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৫টিই শিশু। এই পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠক করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। গতকাল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে , ‘ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও অন্যরা যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, যত দিন প্রয়োজন, তত দিন হামলা চলবে। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার জন্য ইসরায়েলি জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনি ‘গভীরভাবে মর্মাহত’ হয়েছেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব সব পক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিতে চান যে নির্বিচার বেসামরিক লোকজন ও সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

গত শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অবস্থিত ১২ তলা একটি ভবন হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। ওই ভবনে এপি ও আল-জাজিরার কার্যালয় ছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, আল-জালা নামে ওই ভবন তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। সেখানে হামাসের সামরিক বাহিনীর কার্যালয় রয়েছে। এ কারণে হামলার আগে তারা ওই ভবন থেকে মানুষকে সরে যেতে সতর্ক করেছিল। হামলার নিন্দা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু গত সপ্তাহে। জেরুজালেমের আল-আকসায় পবিত্র জুমাতুল বিদা আদায়কে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঘটনা।