বন্দরে স্ক্যানার স্থাপনে দীর্ঘসূত্রতা: দুর্নীতি ও অব্যবস্থার বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে

উন্নয়ন ডেস্ক –

চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের তিন বিমানবন্দরে স্ক্যানার মেশিন স্থাপন প্রক্রিয়ায় কাঙ্ক্ষিত গতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। এতে রপ্তানি খাতে ঝুঁকি বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ছয়টি স্ক্যানার ক্রয় এবং পাঁচ বছর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও বিষয়টি গত দেড় বছর ধরে ঝুলে থাকার বিষয়টি বিস্ময়কর।

কয়েক বছর আগে দুর্বল নিরাপত্তা ও স্ক্যানিংয়ের অভিযোগে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে আকাশ ও নৌপথে পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এতে রপ্তানি খাতে বিপুল অঙ্কের ক্ষতি হয়। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর, যা বলাই বাহুল্য। সরকারের নানা প্রচেষ্টা ও কূটনৈতিক তৎপরতায় এ নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও পুনরায় নৌবন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে অডিট অভিযান শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

জানা গেছে, এসব অডিটে পণ্য স্ক্যানিংয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দুর্বল স্ক্যানিংয়ের কারণে যাতে রপ্তানি পণ্যের সঙ্গে কোনো ধরনের বিস্ফোরক বা মাদক সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য তাদের এই কার্যক্রম। এমন বাস্তবতায় শাহজালাল বিমানবন্দরের স্ক্যানার এবং ওজন মাপার মেশিন বারবার নষ্ট হওয়ার বিষয়টি রপ্তানি খাতসংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলেছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে একবার স্ক্যানিং মেশিন বিকল হলে মেরামতে সময় লাগে এক থেকে দুই মাস।

এখানে দক্ষ জনবলেরও সংকট রয়েছে। অভিযোগ আছে, স্ক্যানার ও ওজন মাপার মেশিন নষ্ট থাকার সুযোগে একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের অবৈধ পণ্য পাচারের চেষ্টা করে। এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কিছু অসাধুু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এসব কারণেই দরপত্রে নানা শর্ত জুড়ে দিয়ে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে স্ক্যানার ও নিরাপত্তা সামগ্রী ক্রয় ও স্থাপন প্রক্রিয়া।

সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন অন্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি কার্গো ডেলিভারি করতে হচ্ছে। আগে প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০টি কার্গো ফ্লাইট থাকলেও এখন গড়ে শিডিউল, নন-শিডিউল মিলে শতাধিক ফ্লাইট ওঠানামা করছে। বিদেশি ক্রেতাদের বিপুল চাহিদার কারণে কনটেইনার কার্গোর চাপ বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরেও।

এদিকে বিভিন্ন কারণে বিদেশি ক্রেতা ও দেশের রপ্তানিকারকরা আকাশপথে পণ্য পরিবহণে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু বিমানবন্দরের স্ক্যানার ও ওজন মাপার মেশিন প্রায়ই বিকল থাকায় রপ্তানিতে বড় জট সৃষ্টি হচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর ও দেশের বিমানবন্দরগুলোর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে সেজন্য কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে।