ভারতে থেকে সরকারি সহায়তায় দেশে ফিরেছেন ৪ হাজারের বেশি নাগরিক

উন্নয়ন ডেস্ক –

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে চূড়ান্ত পর্যায়ে আজ (০৮ জুলাই) চেন্নাই হতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট যোগে ১১২ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন। এ নিয়ে ভারতের বিভিন্ন শহর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সহ বিভিন্ন বিমান সংস্থার মোট ৩৮ টি বিশেষ ফ্লাইটে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাংলাদেশি আকাশপথে দেশে প্রত্যাবর্তন করলেন। দিল্লী, চেন্নাই, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু ও কলকাতা থেকে এ ফ্লাইটগুলো পরিচালিত হয়েছে।

বিগত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিভিন্ন দেশে আরোপিত লকডাউনে অন্যান্য দেশের মত অনেক বাংলাদেশি রোগী, ছাত্র ও পর্যটক ভারতে আটকে পড়েন। নয়া দিল্লীস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের উদ্যোগে এ সকল বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার দ্রুততম সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, চেন্নাই–ঢাকা রুটে গত ২০ এপ্রিল পরিচালিত ফ্লাইটটি চলমান মহামারিকালীন সময়ে বিশ্বের যেকোন দেশ হতে বাংলাদেশে পরিচালিত প্রথম ফ্লাইট।

আকাশপথের পাশাপাশি সড়কপথেও অনেক বাংলাদেশি দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন। লকডাউন চলাকালে গত মে ও জুন মাসে সীমান্ত হতে ভারতের দূরবর্তী রাজ্যসমূহ যথা তামিলনাড়ু, গুজরাট, কর্নাটকা, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লী ও উত্তর প্রদেশ হতে প্রায় ৫০ টি বাসে সহস্রাধিক বাংলাদেশি দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন । এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকাসমূহ হতে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনসমূহের সহযোগিতায় আরো কয়েক হাজার বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। ভারত থেকে লকডাউন চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনকারীর সংখ্যা সর্বমোট ০৮ (আট) সহস্রাধিক।

দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, বাংলাদেশের যে সকল নাগরিক নানা প্রয়োজনে এখনও ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন তাদেরকে জানানো যাচ্ছে, ভারতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম সীমিত আকারে চালু রয়েছে। আগ্রহী যাত্রীগণ এ সকল যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে স্থল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে যেতে পারেন। অভ্যন্তরীণ এ ধরণের যাত্রার পূর্বে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স বা রাজ্যসমূহের নির্দেশমালা অনুসরণ করতে হবে। বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশের সকল স্থলবন্দরসমূহ উন্মুক্ত রয়েছে। তবে, ভারতীয় স্থলবন্দর সমূহে যাতায়াত সংক্রান্ত ভিন্নরূপ নির্দেশনা থাকতে পারে।

এ সময় বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসায় উল্লিখিত ভারতীয় স্থলবন্দর সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসরণ করার কথাও জানানো হয়। এ ধরণের যাত্রার পূর্বে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় স্থলবন্দর খোলা রয়েছে কিনা তা যাচাই করে নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।

হাই কমিশনের এই নির্দেশনায় আরো বলা হয়, যেসকল বাংলাদেশিদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে তাঁরা নয়া দিল্লী, মুম্বাই, কলকাতা, গুয়াহাটি বা আগরতলা’র মধ্যে যে কোন নিকটস্থ বাংলাদেশ মিশনে যোগাযোগ করে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করতে পারেন। জরুরি ট্রাভেল পারমিটের জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয় নয়া দিল্লীস্থ বাংলাদেশ মিশনে এই ইমেইল ঠিকানায় bdhccons@gmail.com

এ ছাড়াও যাদের ভারতীয় ভিসার মেয়াদ/এককালীন (যেমন একবারে ৯০ দিন পর্যন্ত) অবস্থান সংক্রান্ত শর্ত শেষ হয়ে গিয়েছে তাঁরা ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি বা exit permit – এর জন্য অনলাইনে ভারতের FRRO (Foreigners Regional Registration Office) এর ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে।

বাংলাদেশের নাগরিকদের দেশে প্রত্যাবর্তনের সময় exit permit বা আবেদনের কপি সঙ্গে রাখার নির্দেশও দেয়া হয়। এ বিষয়ে নিম্নোক্ত ওয়েব লিংকের নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়: https://indianfrro.gov.in/eservices/home.jsp