উন্নয়ন বার্তা ডেস্ক:
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চমূল্যে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের অসহনীয় অবস্থা। কোন পণ্যের দামই নাগালের মধ্যে নেই। প্রতিদিনই কোন না কোন পণ্যের দাম বেড়ে রেকর্ড গড়ছে। মানুষের আশা ছিল শীতের মওসুমে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে। এই ভরা মওসুমের কমেনি সবজির দাম। তবে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। খুচরা বাজারে ডিমের ডজন ১৫০ টাকা থেকে কমে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আজ সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
একটি বড় সাইজের ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, বাঁধাকপি ও চালকুমড়াও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। অন্যদিকে বরবটি, করলা, বেগুন, কচুর্মুখী, কাকরোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি বাজারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ৩০ আর মুলা ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতিপিস ৫০-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানী কাওরান বাজারের একাধিক সবজি বিক্রেতা জানান, টমেটো এখনো ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা টমেটো ৪০-৫০ টাকা কেচিজতে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম না কমার কারণ জানতে চাইলে খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা মোকাম বা স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ার অজুহাত দিচ্ছেন। সঙ্গে পরিবহন ব্যয়, দোকান ভাড়া ও অন্যান্য খরচ বৃদ্ধিকেও সামনে আনা হচ্ছে।
এদিকে মুদি বাজারে গিয়েও কোনো সুখবর নেই। বাজারে আরেক দফা বেড়েছে চাল, তেল, আটা, ময়দা ও চিনির দাম। এতে সাধারণ মানুষ আরও বিপাকে পড়েছেন।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে মোটা চালের দাম না বাড়লেও বেড়েছে চিকন চালের দাম। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবি চিকন চালের কেজি ৩ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৭২ টাকা, মাঝারি বা পাইজাম চাল ২ টাকা বেড়ে ৫৪ থেকে ৬০ টাকা এবং মোটা চালের কেজিতে ২ টাকা বাড়িয়ে ৪৮ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও বাজারের খুচরা ব্যবাসয়ীরা বলছে, টিসিবির তথ্যের থেকে কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে প্যাকেটজাত আটা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দায় ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে গত ১৭ নভেম্বর থেকে সয়াবিন তেল ও চিনির দাম আরও বেড়েছে। এখন সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। আগের চেয়ে কেজিতে বেড়েছে প্রায় ১২ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনি কেজিতে ১২ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হয়েছে ১০৭ টাকায়। যদিও বাজারে নির্ধারিত দামের তেল পাওয়া গেলেও চিনি কিনতে ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। সরবরাহ সংকটের কারণে বাজারভেদে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ডিমের ডজন ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও পাবনার ঈশ্বরদীতে খামারিরা ডিম বিক্রি করছেন ৩১ টাকা ৬০ পয়সা হালি দরে। প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ৭ টাকা ৯০ পয়সা। খামারিরা বলেছেন, তারা চলতি বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে ডিম বিক্রি করছেন এ সপ্তাহের শনিবার থেকে আজ (শুক্রবার) পর্যন্ত।
খামারিরা জানান, ২০২২ সালের মধ্যে চলতি সপ্তাহে ডিমের দাম সর্বনিম্ন। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে খামারে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হয়েছে ৭ টাকা ৯০ পয়সায়। একটি ডিম উৎপাদনে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ টাকা ৫০ পয়সা। খামারিদের উৎপাদন খরচের চেয়েও ২ টাকা ৬০ পয়সা কম দামে ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে। একই সঙ্গে, মুরগির দামও কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে।